খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার জনসভা

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার জনসভা

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভা থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। রবিবার দুপুর ২টা থেকে এ সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তারা জনসভা থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি তাকে কারাগারে রেখে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

জনসভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমি সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া জেলে কেন? জবাব দিতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্য মামলায় জেলে দিয়েছেন। জামিন পেলেও এখনো তিনি জেলে কেন? জবাব দিতে হবে। যতই চেষ্টা করেন না কেন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।

যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বাংলার মাটিতে কোনো নির্বাচন হবে না। কিন্তু সরকার চক্রান্ত করছে ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন করতে। কিন্তু সেটি সরকারকে করতে দেওয়া হবে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করব।

যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে এবং তারেক রহনানের মিথ্য মামলা প্রত্যাহার করার আগে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না৷ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।

যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন বলেন, অবৈধ সরকার দেশের রাজনীতিতে পাথরের মতো চেপে বসেছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি করেছি নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নির্বাচনের। কিন্তু তারা আমাদের কোনো দাবি মানেনি৷ তাই আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বেগম খলেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে আন্দোলনের সুনামি বয়ে যাবে। তাই সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এ সরকারে লোকেরা ভারত পালিয়ে যাবে, সেজন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। তাই আমাদেরও প্রস্তুতি নিতে হবে শেখ হাসিনাকে বিদায় করার।

সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুক কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘আমি বিএনপি নেতাকর্মীদের বলতে চাই, আপনারা সবাই বর্ডারে পাহারা দেন যাতে কেউ দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে। আপনাদের সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। যাতে এই সরকারকে সহযোগিতা করা কেউ দেশ ছাড়তে না পারে।’

সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, ‘বাংলাদেশে খুনের আসামিদের জামিন হয় অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন না দিয়ে তাঁকে আটকে রাখে। আমি নেতাদের বলতে চাই, আপনারা কর্মসূচি দিন, আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব। তাই দ্রুত আন্দোলনের কর্মসূচি দিন।’

সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবৈধ সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।

সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, জনগণ স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাবে। আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে।

ঢাকার সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আজ প্রমাণ হয়েছে, সরকার শত চেষ্টা করেও জনতার ঢল থামাতে পারেনি। বাংলাদেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। এবার ঢাকার মানুষ বসে থাকবে না, সব ষড়যন্ত্র থামিয়ে দিয়ে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার বলেন, আজ বিএনপি নেতাকর্মীরা শত জুলুম নির্যাতন সহ্য করে জনসভায় এসেছে। আজ অবৈধ সরকার আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে। আমরা বলতে চাই, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমাদের দাবি, মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব। তাঁকে কারাগারে রেখে আমরা ঘরে ফিরে যাব না।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, বিনা ভোটের সরকারের পতন ঘটানোর আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে মহিলা দল। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব।

যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব বলেন, সরকার নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক গায়েবি মামলা দিচ্ছে। কিন্তু এসব করে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে আর ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন হতে দিবে না জিয়ার সৈনিকরা। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। সরকার বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচনের যত ষড়যন্ত্র করুক তা রুখে দেবে। আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, এই অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা দখল করে রাখতে গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রেখেছে। তাই বেগম খালেদা জিয়া ও দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, রাজপথে তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বাধ্য করা হবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমদ খান বলেন, আজ শেখ হাসিনা সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলা দিচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা মামলায় আটকে রেখেছে। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে নিজের বুকের রক্ত দিয়ে হলেও বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনতে হবে।

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের সবচেয়ে বড় ভয় বেগম খালেদা জিয়া। তিনি মুক্ত থাকলে তারা অবৈধ ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। সেজন্য তাঁকে মিথ্যা মামলায় আটকে রেখেছে। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। না হলে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। তিনি আরো বলেন, এ সরকার দেশের সাধারণ জনগণ নয় শুধু, শ্রমিকদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছে। তাদের দাবি করা মুজুরি দিচ্ছে না। তার একটাই কারণ দেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৭৫০ঘ.)