এটা কেমন প্রেম? স্ত্রীকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে স্বামী

এটা কেমন প্রেম? স্ত্রীকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে স্বামী

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় মিম খাতুন (২২) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন স্বামী সুমন হোসেন (২৮)। স্ত্রীকে খুনের পর মরদেহ বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা চালান তিনি।

কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন সুমন। পরে আদালতের কাছেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। তারপর তাকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

গত শনিবার উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল রবিবার মিমের ভাই বাদী হয়ে খোকসা থানায় মামলা দয়ের করলে পুলিশ সুমনকে গ্রেপ্তার করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে উভয় পরিবারের পরিবারের অমতে প্রেম করে মিম খাতুনকে বিয়ে করেন সুমন। বৈবাহিক সম্পর্কের পাঁচ বছরে তাদের কোনো সন্তান ছিল না। এ দম্পতির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। শনিবার রাতে মিম ও তার শাশুড়ির মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সুমন স্ত্রীকে চড়-থাপ্পড় দেন। এ অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে মিম আত্মহত্যা করেছেন বলে সুমনের পরিবার প্রচার করেন। তবে ওই গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজন একে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে রোববার সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিহত মিমের বাবা নজরুল খানের দাবি, তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য জামাই সুমন হোসেন ও তার মা হত্যা করেছেন। প্রায়ই মিমের শাশুড়ি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও নির্যাতন করতেন বলেও দাবি করেন তিনি।

মিমের ভাই মামলার বাদী পলাশ জানান, তিন বছর আগে স্কুলে পড়াকালীন মিমের সঙ্গে সুমনের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরিবারকে না জানিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন। দুই পরিবারের কেউই এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। একপর্যায়ে গত বছর দুই পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে মেনে নেয়। তবে বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকত।

এ বিষয়ে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল আলম বলেন, ‘আমরা লাশটির ময়নাতদন্ত করার জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। গতকাল দুপুরেই নিহত গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে তিনি স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বারান্দার গ্রিলে ঝুলিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেন। এরপর তাকে কুষ্টিয়া জেলা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’