নির্বিঘ্নে ভোট দান ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে

বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের সর্বসম্মত বিল পাস

বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের সর্বসম্মত বিল পাস

ওয়াশিংটন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ১৩ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ): বাংলাদেশে পক্ষপাতহীন, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সর্বসম্মত বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস।

একিসঙ্গে নির্বাচনে ভোটার যেনো নির্বিঘ্নে তাদের ভোটে অংশ নিতে পারে, স্বাধীন মত প্রকাশে যেনো কোনো রকমের বাধা প্রদান না করা হয় সে বিষয়েও জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে পাস হওয়া বিলটিতে।

বাংলাদেশে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি সংক্রান্ত বিলটি বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভায় সর্বসম্মতভাবে পাস করা হয়।

এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর ১১৫ তম কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে রেজ্যুলেশনটি (নং-১১৬৯) উপস্থাপন করেন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান বিল কিটিং, যিনি একাধারে পররাষ্ট্র বিষয়ক কংগ্রেসনাল কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য।

রেজ্যুলেশন উত্থাপনের পরপরই তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাউজ কমিটি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্সে। কমিটি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স বুধবার রেজ্যুলেশনটি কংগ্রেসে উত্থাপন করে। বাংলাদেশ বিষয়ক এ রেজ্যুলেশনে বিল কিটিং ছাড়াও অংশ নেন কংগ্রেসম্যান টেড ইয়োহো, কংগ্রেসম্যান ইলিয়ট এঙ্গেল, কংগ্রেসম্যান ব্র্যাড শেরম্যান, কংগ্রেসম্যান স্টীভ শ্যাবট, কংগ্রেসম্যান জেরি কনলি ও কংগ্রেসম্যান ড্যারেন সটো।

কংগ্রেসে রেজ্যুলেশন উত্থাপনের পর যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় স্থানীয় সময় বুধবার বিকাল ২.৪৫ মিনিটে তা বিল আকারে সর্বসম্মতভাবে পাস করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে শুধুমাত্র স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনই দেখতে চায় উল্লেখ করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আবারো তার দৃঢ় অবস্থান পুর্নব্যক্ত করছে।

বিলে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষকে জনগণের মত প্রকাশে বাধা না দেওয়া এবং মিডিয়াকে মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ দেবার আহবান জানানো হয়।

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের কথা উল্লেখ করে পাস হওয়া বিলটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কথা অনুযায়ী সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত। আর নির্বাচন আয়োজনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন অটুট থাকে।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে পক্ষপাতহীন এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, সব রাজনৈতিক দল এবং শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীলদের উচিত নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান দেয়া। সর্বাগ্রে সবাইকে এ বিষয়টি নিশ্চত করতে হবে যেন ভোটাররা বাধাহীনভাবে আসন্ন নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

এতে বলা হয়, নির্বাচন যেন পক্ষপাতহীন এবং অংশগ্রহণমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

বিলটিতে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার এবং উদারতা প্রকাশের জন্য বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের প্রশংসা করা হয়।

এর আগে গত ৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ নিয়ে উত্থাপিত রেজ্যুলেশনে বলা হয়, বাংলাদেশে গণতন্ত্র কাঠামো রক্ষায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন জরুরি।

এতে বলা হয়, প্রকৃত একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো। নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, যথাযথ, নিরাপদ এবং ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন।

রেজ্যুলেশনে বলা হয়, যদি গণতন্ত্র আর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর আক্রমণ হয় তবে তা হবে বাংলাদেশের জনগণের আত্মত্যাগকে অবজ্ঞা করার শামিল। একিসঙ্গে দেশটি মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তাকে না মানার শামিল।

২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে রেজ্যুলেশনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিরােধীদলগুলো পক্ষপাতের আর অনিয়েমর কারণেই ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছিলো।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্ট।

(জাস্ট নিউজ/জিএস/০২২৫ঘ)