জাতিসংঘ মহাসচিবের বিবৃতি

ভয়-ভীতিহীন, চাপমুক্ত পরিবেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করুন: আন্থোনিও গুতেরেস

ভয়-ভীতিহীন, চাপমুক্ত পরিবেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করুন: আন্থোনিও গুতেরেস

নিউইয়র্ক, ২৭ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ): ভয়-ভীতিহীন, হয়রানিমুক্ত পরিবেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের সব পক্ষকে তাগাদা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেস।

আগামী ৩০ ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বিবৃতিতে তিনি এই আহবান জানান।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ বিবৃতি দেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে সংস্থাটির অব্যাহত প্রতিশ্রুতির কথা পুর্নব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘ বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ৩০ ডিসেম্বরের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ যেনো সহিংসতামুক্ত, ভয়-ভীতিহীন, যেকোনো ধরনের চাপমুক্ত হয় বাংলাদেশের সব কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। নির্বাচনের পূর্বে, নিবাচনকালীন সময় এবং এরপরেও যেন এই পরিবেশ নিশ্চিত থাকে, যাতে করে একটি শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বলে বিবৃতিতে আহবান জানানো হয়।

নাগরিকদের নিরাপদে ভোটদানের সুযোগ তৈরির আহবান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সংখ্যালঘু এবং নারীসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকই যেনো অবশ্যই একটি নিরাপদ পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজ এবং পর্যবেক্ষকদের বাধাহীন পরিবেশে কাজ করার সুযোগ করে দেবার আহবান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সুশীল সমাজ এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষদের নির্বাচন কার্যক্রমে স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় পূর্ণ সমর্থন দিতে হবে ।

এর আগে ২১ ডিসেম্বর ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিককে প্রশ্ন করা হয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির সর্বশেষ দশা তোলে ধরে জাতিসংঘ সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান-"বাংলাদেশে এখনো বিরোধী নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও ধর-পাকড় অভিযান অব্যাহত রেখেছে ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ। এই কঠিন বাস্তবতায় আপনি কি এখনো মনে করেন বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব? শুধু তাই নয় সরকার আদালতকে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করে একের পর এক বিরোধী দলের প্রার্থীকে অযােগ্য ঘোষণা করছে।"

জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র ডোজারিক বলেন, "আমরা এর আগেও বলেছি, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে যে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা ঘটছে এবং বিরোধীদলের প্রার্থী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তা উদ্বেগের।"

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের জ্যেষ্ঠ এই মুখপাত্র বলেন, "আমরা বাংলাদেশের সকল কর্তৃপক্ষকে বলবো নির্বাচন যেনো অংশগ্রহণমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য হয় তার জন্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। আর এটা করতে হলে যেটা খুবি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সদস্যদের অবশ্যই পক্ষপাতহীনভাবে সকল নির্বাচনী প্রার্থীদের প্রচারণার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে, যাতে করে তারা স্বাধীনভাবে নির্বাচনী প্রচার কাজ চালিয়ে যেতে পারে।"

তিনি বলেন, "নিরাপত্তা বাহিনীকে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে বাংলাদেশি নাগরিকরা নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সুশীল সমাজ এবং নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা যেনো মুক্তভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা দিতে হবে।"

 

(জাস্ট নিউজ/জিএস/১৪৫০ঘ)