যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটির গুরুত্বপূর্ণ শুনানি অনুষ্ঠিত

‘হাসিনার এক দলীয় শাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী’

‘হাসিনার এক দলীয় শাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন  যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী’

ওয়াশিংটন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী

বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জয় পাকাপোক্ত করে অব্যাহতভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার যে ধরন দেখা গেছে তা উদ্বেগকে সামনে নিয়ে আসে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা দেশটিকে কার্যত এক দলের শাসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জন্য আশঙ্কাজনক।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক শুনানিতে এ উদ্বেগ এবং আশংকা প্রকাশ করা হয়। সিনেট কমিটি অন আর্মড সার্ভিসের চেয়ারম্যান সিনেটর জেমস এম ইনহোফের সভাপতিত্বে পূর্ণাঙ্গ হাউস কমিটি শুনানি গ্রহণ করেন।

শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বক্তব্য উপস্থাপন ও প্রশ্নোত্তর দেন ইউএস ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের কমান্ডার এডমিরাল ফিলিপস এস ডেভিডসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কম্বাইন্ড ফোর্স কমান্ডার জেনারেল রবার্ট বি আব্রামস। শুনানিতে ২০২০ অর্থ বছরের জন্য পৃথিবীর অন্যান্য অংশের ন্যায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা কর্তৃপক্ষের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়।

শুনানির বাংলাদেশ অংশে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিয়ে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বলয় কৌশল তৈরিসহ বেশ কিছু মূল্যায়ন তোলে ধরা হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শুনানিতে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, “ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের জয় পাকাপোক্ত করে অব্যাহতভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার যে ধরন ৩০ ডিসেম্বরের বাংলাদেশের নির্বাচনে দেখা গেছে তা উদ্বেগের বিষয়। একিসঙ্গে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার দিকে অগ্রসর হবার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে।”

এতে বলা হয়, “বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, এটা করতে হবে কৌশলগত বড় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। সেই সাথে আন্তর্জাতিক মান বজায়, প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করতে এখানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে হবে।”

এশিয়ায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম নিরাপত্তা অংশীদার উল্লেখ করে শুনানিতে বলা হয়,“বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার। আঞ্চলিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে এ অংশীদারির গুরুত্ব রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসবাদ দমন, মুসলিম সংখ্যাধিক্যতা, চরমপন্থা দমন, মানবিক সহায়তা এবং দুর্যোগ মোকাবিলা আর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেয়ার কারণে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।”

রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে এতে বলা হয়, “মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সাত লাখেরও বেশী রোহিঙ্গাদের এক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আর তা নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে বাংলাদেশ।”

জিএস/