ইতিহাস গড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার

ইতিহাস গড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার

ওয়াশিংটন থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী

আট-দশজনের মতোই সাধারণ তিনি। ভাবলেশহীনভাবে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক টুকছেন কাঠের পিঠে। হঠাৎ দেখলে যে কেউ মনে করবেন কাঠমিস্ত্রীদের কেউ। কিন্তু আসল ঘটনাটা ভিন্ন! প্রতাপশালী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট তিনি, নাম জিমি কার্টার। অংহকারহীন আর সাদামাটা একজন মানুষ।

একসময়ের ক্ষমতাধর এই প্রেসিডেন্ট পেরেক টুকছেন মানুষের উপকারে কাজ করার জন্য। কাজের চেয়েও মানবসেবাটা তাঁর কাছে বড়। প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব পালন শেষে বেছে নেন কঠিন শারীরিক পরিশ্রমের কাজ-বাড়ি তৈরী। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দরিদ্রের জন্য নির্মাণ করে চলেন একের পর এক বাড়ি। সেই সাথে চলে আর্তমানবতার সেবার কাজ।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট কার্টার শুক্রবার পা দিয়েছেন ৯৪ বছর ১৭২ দিনে। আর এর মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করলেন শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রাক্তন এই প্রেসিডেন্ট। দেশটির সবচেয়ে বেশি সময় জীবিত থাকা প্রেসিডেন্ট হওয়ার রেকর্ড এখন তাঁর। এর আগে সবচেয়ে বেশি বয়সে মারা যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশেরও বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর ১৭১ দিন।

কার্টার সেন্টারের মুখপাত্র দিননা কনগ্লিয়ো সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, "কার্টার এবং তাঁর স্ত্রী প্রতিদিনই নিয়ম করে হাঁটেন আর সুষম খাবার গ্রহণ করেন। এমন রুটিনমাফিকই চলাফেরা তাদের।"

তিনি বলেন, "পুরো পৃথিবীকে কিভাবে আরো বাসযোগ্য করা যায় সে নিয়েই সবসময় ভাবেন কার্টার এবং তাঁর স্ত্রী। আর এ পথে দুজনই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাদের এ সেবা এবং উদারতায় মুগ্ধ আর কৃতজ্ঞ পৃথিবীর লাখো মানুষ।"

স্মরণীয় এই দিনটিতে বিশেষ কোনো আয়োজনের পরিকল্পনা করেনি কার্টার সেন্টার।

এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, "কার্টার সেন্টারে যারা রয়েছেন তারা কার্টার দ্বারা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। তাঁর দীর্ঘায়ুর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। পৃথিবীর লাখো দরিদ্র মানুষ উপকৃত হচ্ছেন প্রাক্তন এই প্রেসিডেন্টের সেবায়।"

জিমি কার্টার একাধারে রাজনীতিবিদ, লেখক। ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ক্ষমতায় থাকাকালে এবং পরবর্তীতে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার কারণে সুনাম কুড়ান কার্টার।

বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে কার্টার সেন্টার স্থাপনের পর ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন প্রেসিডেন্ট কার্টার

জিএস/