ওয়াশিংটনের বেনার নিউজে আঁকা গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়ার কারা জীবন

ওয়াশিংটনের বেনার নিউজে আঁকা গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়ার কারা জীবন Photo credit: BenarNews

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দুর্নীতির মামলায় একবছরেরও বেশী সময় ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর মুক্তির দাবিতে দেশের জনগণ যেমন সোচ্চার তেমনি দাবি উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মানবাধিকার রিপোর্টে বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাবরণ করছেন বলে মন্তব‌্য করা হয়েছে।

জেলে আটক বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবন্দি জীবনের দুর্বিসহ চিত্র দৃশ্যমান করার চেষ্টা করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতীক-বেনার নিউজ।

খালেদা জিয়ার কারাকক্ষে যাবার অনুমতি কারো নেই। প্রত্যক্ষদর্শী, বিশেষজ্ঞ, বিরোধী দল বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাক্ষাতকার এবং বর্ণনা অনুযায়ী তাঁর কারা জীবন দৃশ্যমান করার চেষ্টা করেছে বেনার নিউজ।

ছবিগুলো এঁকেছেন (স্কেচ) রেডিও ফ্রি এশিয়ার রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট ওয়াং লিমিং। তিনি রিবেল পিপার ছদ্মনামে কার্টুন আঁকেন। তার আঁকা ছবিগুলি বুধবার প্রকাশ করা হয়।প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংবাদমাধ্যমটির ঢাকা প্রতিনিধি কামরান রেজা চৌধুরী।

বেনার নিউজের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশের বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে এক বছরের বেশি সময় ধরে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছেন।”

খালেদা জিয়াকে বিরোধীদলের ‘আইকন’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে এককভাবে আটকে রাখা হয়েছে খালেদা জিয়াকে। ২০১৬ সালেই সরকার জেলটিকে খালি করে তার কয়েদিদের অন্য এক কারাগারে স্থানান্তর করে।”

খালেদা জিয়ার জেল কক্ষের বর্ণনা দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, “সাবেক কারা কর্মকর্তার ব্যবহার করা একটি কক্ষে তাঁকে আটক রাখা হয়েছে। কক্ষটি দৈর্ঘ্যে ১০ ফুট আর প্রস্থে ৮ ফুট। তাঁর কক্ষে একটি টেবিল, দুটি চেয়ার, গ্লাস, প্লেট, ডিশ, চিরুনি, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, সাবান, শ্যাম্পুসহ অন্যান্য কিছু সুবিধা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারি কারা পরিদর্শক।”

২০১৮ সালের জুন মাসে খালেদা জিয়ার কারাগারের ভেতরকার পরিবেশের দুরবস্থার কথা সংবাদ সম্মেলনে তোলে ধরেন মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় কারাগারের অবস্থা খুবই জঘণ্য। রয়েছে বড় বড় ইদুঁরের উপদ্রব। আপনারা জেনে অবাক হবেন যে ম্যাডাম যে কক্ষে থাকেন সেখানে বিড়াল ইঁদুর শিকার করে।”

শুধু বিএনপি নয় অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারাও জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার কক্ষে কীট-পতঙ্গ এবং চারপোকার আবাস রয়েছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের সময় কাটানো প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, “তিনি প্রতিদিনই নাস্তায় ফল খেতে পছন্দ করেন। আর পত্রিকা পড়েন।”

 

খালেদা জিয়াকে কারাগারে একটি মাত্র পত্রিকা পড়ার সুযোগ দেয়া হয়। আর টেলিভিশন রাখা হলেও বিটিভি ছাড়া অন্য কিছু দেখার সুযোগ নেই।

কারাগারের ভেতরেও খালেদা জিয়ার জন্য আদালত বসানোর কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, “খালেদা জিয়াকে যে জেলে আটক রাখা হয়েছে তার ভিতরেই বিশেষ আদালত বসিয়েছে সরকার। বিভিন্ন মামলায় তাঁকে সেখানে হাজিরা দিতে হয়। আদালত কক্ষটি খুবি সংকীর্ণ। দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট আর প্রস্থে ১২ ফুট হবে। আদালতে হাজিরার সময় দুজন মহিলা পুলিশ তাঁকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়া নানান রকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন।

জিএস/