ওয়াশিংটন ন্যাশনাল প্রেসক্লাব সদস্য সিনেটর লোগারের বিদায়

ওয়াশিংটন ন্যাশনাল প্রেসক্লাব সদস্য সিনেটর লোগারের বিদায়

মুশফিকুল ফজল আনসারী

কোনো কিছু যেমন থেমে থাকেনা, ঠিক মন চাইলেও কোনো কিছুকে ধরে রাখা যায়না। আজকে যিনি সংবাদের পিছু ছুটেন সময়ের পালাবাদলে ভাগ্যই তাকে সংবাদের বস্তু বানিয়ে নেয়। ঠিক তেমনি সংবাদের শিরোনাম হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন ওয়াশিংটন ন্যাশনাল প্রেসক্লাবের সদস্য সিনেটর রিচার্ড লোগার।

২৮ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার আইনোভা ফেয়ারফ্যাক্স হার্ট এন্ড ভাস্কুলার ইন্সস্টিটিউটে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। তিনি স্নায়ুতান্ত্রিক জটিলতায় ভুগছিলেন।

লোগার মৃত্যুতে শোকাহত ন্যাশনাল প্রেসক্লাব পরিবার। ২০১৭ সালে প্রেস ক্লাবের সদস্য হিসেবে যোগ দেন তিনি। সদস্য হবার পর প্রতিদিন দুপুরেই দেখা যেতো রিলায়েবল সোর্সে ( সদস্যদের রেষ্টুরেন্ট) লোগারের প্রাণবন্ত উপস্থিতি।

Photo: Martin Kuhn/NPC Archives

সিনেটর লোগার জীবন ছিলো বর্ণাঢ্য ও কর্মময়। পেছেনে রেখে গেছেন স্মৃতি আর কর্ম গাঁথার ঢালি। জীবদ্দশায় ৬ বারের মেয়াদে সিনেটর ছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ানার প্রাক্তন এই সিনেটর রিপাবলিকান পার্টির একজন সদস্য হিসেবে পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণে ছিলেন সরব কন্ঠ, দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে তাঁর ভূমিকা ছিলো অগ্রগণ্য।

১৯৬৪ সালে ইন্ডিয়ানাপলিস বোর্ডস অব কমিশনারস-এ নির্বাচিত হবার মাধ্যমে শুরু হয় লোগারের রাজনৈতিক জীবনের হাতেখড়ি। ১৯৭৬ সালে সিনেট লড়াইয়ে নামার আগে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন ইন্ডিয়ানাপলিসের মেয়র হিসেবে।

সিনেটে স্থলাভিষিক্ত হবার পর ফরেন রিলেশন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দুই মেয়াদে। ইন্ডিয়ানার ইতিহাসে দীর্ঘ মেয়াদের সিনেটর হিসেবে সাফল্য তৈরি করেছেন লোগার।

লোগারের মেয়াদকালে যদিও স্নায়ুযুদ্ধ প্রায় শেষ দিকে ছিলো কিন্তু তিনি চিন্তিত ছিলেন আণবিক মরণাস্ত্র তৈরির বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা দেখে। নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে তিনি অসাধারণ দূতিয়ালির ভূমিকা পালন করেন।

২০১২ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন লোগারকে প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম সম্মাননায় ভূষিত করেন তখন বলেছিলেন, "লোগারের জন্যই হাজারো ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা, যুদ্ধজাহাজ বা পরমাণু অস্ত্র কোনটাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এখন হুমকি নয়।"

লোগার ২০১৩ সালে লোগার সেন্টার নামে এক থিংক ট্যাংকের যাত্রা শুরু করেন। পুরো জীবনের সাধনার সমন্বয় ঘটিয়েছেন এই সেন্টারে- পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ, খাদ্য, জ্বালানি, সরকার এসব রয়েছে এর কেন্দ্রে।

লোগারের স্মরণে ইউএসটুডে-তে কলাম লিখেছেন ন্যাশনাল প্রেসক্লাবের সদস্য মাওরিন গ্রোপে।

লোগারের দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা এবং লোগার সেন্টারের পলিসি ডিরেক্টর ডেন ডিলার বলেছেন, "যতদিন সিনেটর ছিলেন ততদিনই ন্যাশনাল প্রেসক্লাবের কাজের কৃতিত্ব আর সুনামের স্বীকৃতি দিয়েছেন লোগার। ক্লাবটিকে নীতিনির্ধারক আর সংবাদকর্মীদের সেতু বন্ধন মনে করতেন তিনি।"

জিএস/