নজর জাতিসংঘে

নজর জাতিসংঘে

নিউইয়র্ক থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ১৮ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ): জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের নানা দেশ থেকে আগত রথি-মহারিথরা। সদস্য রাষ্ট্র সমুহের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান পর্যায়ের প্রতিনিধিরা এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিলেও অনেক দেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরর্যায়ের প্রতিনিধি প্রেরনের মধ্য দিয়ে। নানাবিধ জাতিগত, দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক বৈরিতা এবং মিত্রতার হিসেব-নিকেশের পাশাপাশি এবার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া, সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় রোহিঙ্গা সংকট এবং ইরান পরিস্থিতি আলোচনার টেবিল সরগরম রাখবে।

দায়িত্বগ্রহণের আট মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ অধিবেশনে প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে ট্রাম্প। জলবায়ুর মত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে আসার ঘোষণা দিয় বিশ্বকে একরকম তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবারের ভাষণে তাহলে কি গুরুত্ব পাবে ক্ষমতাধর দেশটির প্রেসিডেন্ট এর ভাষণে? ইরান এবং উত্তর কোরিয়া ইস‌্যুর পাশাপাশি এবার নতুন করে যোগ হয়েছে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর চলমান নিপীড়নের ইস‌্যুটি।

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন তিন ইস্যুতেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করবেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তাঁর নির্বাচনী স্লোগান আমেরিকা ফার্স্ট অর্থাৎ সবার আগে আমেরিকা এই নীতিকে প্রাধান্য দিয়েই তিনি অন্যদেশগুলোর সঙ্গে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দফারফা করবেন।

প্রথমবারের মতো ভাষণ দেওয়ার আগে জাতিসংঘের অনেক বিষয়ে উন্নতি করার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। চলতি বছরের এই বিশ্ব সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ১৩০টি দেশের প্রতিনিধিরা স্বাভাবিকভাবেই সবার চোখ থাকবে ট্রাম্পের দিকে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেস অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন। বৈশ্বিক এই সংস্থা পুনর্গঠনে স্বাক্ষর করবেন বিশ্বনেতারা। রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে প্রথমবার জাতিসংঘের শীর্ষ এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ফ্রান্সের তরুণ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রনও।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্মলনে যোগ দিতে প্রায় ৩শ প্রতিনিধির একটি বিশাল বহর নিয়ে বিক্ষোভের মুখে গেলো রবিবার নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন। আগামী ২১ সেপ্টম্বর সাধারণ অধিবেশনে তাঁর ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। তবে ভোটাধিকার হরন, গুম-খুন, মানবাধিকার লংঘন আর লুটপাটের প্রতিবাদে ভাষণের দিন জাতিসংঘের সামনে  বিক্ষোভ কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি সমর্থক বাংলাদেশী আমেরিকানরা। অনির্বাচিত সরকারের প্রধান হিসাবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কতোখানি মুন্সিয়ানা দেখাতে পারবেন শেখ হাসিনা সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

জাতিসংঘ মহাসচিব  অ্যান্টোনিও গুতারেস উত্তর কেরিয়াকে  বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক সঙ্কট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ট্রাম্প তার বক্তব্যে কি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কাছে কি বার্তা দেন সেদিকে নজর সবার।

বিশ্ব নেতাদের কাছে এবার আলোচনায় অগ্রাধিকার পাাবে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম ইস্যুটিও। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার জাতি নির্মূলের অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অ্যান্থনিও। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই সহিংতার নিন্দা জানিয়ে এবং অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে গত ৯ বছরের মতো প্রথম বিবৃতি দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ মহাসচিবসহ বিশ্বনেতাদের অবস্থান বেশ দৃঢ়। তবে সমাধানের পথে কতোটা লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন বিশ্বনেতারা সেটাই এখন দেখার পালা।

(জাস্ট নিউজ/জিইউ/২৩২২ঘ)