ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর

জাতিসংঘকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আহবান

জাতিসংঘকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আহবান

মুশফিকুল ফজল আনসারী

জাতিসংঘ এবং অন্যান্য দাতা গোষ্ঠী ভাসনচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাধীন কারিগরি এবং সুরক্ষামূলক পর্যালোচনার সুযোগ করে দেবার যে দাবি জানিয়ে আসছে তা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করে এক বিবৃতি এ আহবান জানান স্টেট ডিপার্টমেন্টর প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র কেল ব্রাউন।

"ভাসানচরে স্বাধীন প্রবেশাধিকার দিলেই জানা যাবে রোহিঙ্গারা দ্বীপটিতে স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়েছে কী না। ঝড় আর বন্যার ঝুঁকি নিয়ে তারা সেখান স্বেচ্ছায় থাকতে আগ্রহী কী না সে উত্তরও জানা যাবে," বলে মন্তব্য করেন কেল ব্রাউন।

এর আগে রবিবার পুনর্বাসনের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সির (ইউএনএইচসিআর) হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি।

ফিলিপ্পো বলেছেন, "যেকোন স্থানান্তর অবশ্যই স্বেচ্ছায় এবং জ্ঞাত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হতে হবে।"

ভাসানচরে প্রথম দফায় ১,৬৪২ রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন এবং তা অব্যাহত রাখার সরকারের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একিসঙ্গে জাতিসংঘের সঙ্গে সুর মিলিয়ে দেশটি জানিয়েছে, "যেকোন ধরনের স্থানান্তর অবশ্যই পুরোপুরি স্বেচ্ছায় এবং জ্ঞাত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হতে হবে। তাতে কোন ধরনের চাপ এবং ভীতি প্রদর্শন থাকবে না।"

বিবৃতিতে কেল ব্রাউন বলেন, "রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।তবে ভাসানচর দ্বীপে ১,৬৪২ রোহিঙ্গার স্থানান্তর এবং প্রক্রিয়াটা চলমান রাখতে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত উদ্বেগের।"

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "যেসব রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তর করা হয়েছে বাংলাদেশ তাদের মানবাধিকার সুরক্ষায় শ্রদ্ধাশীল হবে। তাদের চলার স্বাধীনতা এবং তাদের ভাসানচর থেকে কক্সবাজার আসা যাওয়া, তাদের জীবিকার ব্যবস্থা, মৌলিক চাহিদা যেমন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ করে দিবে।"

রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে ফিরে যবার পরিবেশ নিশ্চিত করতে মিয়ামনার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কেল ব্রাউন বলেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে প্রত্যাবসন প্রক্রিয়া নিশ্চিতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।" রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ বিভিন্ন দেশে বাস্তুচ্যুতদের সমস্যার সমাধান চায় যুক্তরাষ্ট্র বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, কক্সবাজারে আশ্রয় শিবিরে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশে অবস্থিত জাতিসংঘ অফিস বলেছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রস্তুতি অথবা তাদের শনাক্তকরণের সঙ্গে তাদেরকে জড়িত করা হয়নি।

জিএস/