আস্থা ফেরানোর সংকল্প নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন

আস্থা ফেরানোর সংকল্প নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন Photo: Department of State

মুশফিকুল ফজল আনসারী

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে আস্থা এবং বিশ্বাসের জায়গায় ফিরিয়ে আনার সংকল্প নিয়ে বুধবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে পা রাখলেন বাইডেন প্রশাসনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। আর এই মুহূর্তে এই কাজটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন দেশটির নতুন শীর্ষ কূটনীতিক।

দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকর্মীদের উদ্দেশ্য দেয়া ভাষণে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন ব্লিংকেন। তিনি বলেন, "পুরো বিশ্ব এখন আমেরিকার দিকে চেয়ে আছে।সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতিতে হতাশ মিত্ররা চেয়ে আছে নতুন প্রশাসনের দিকে।" একইদিনে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্রিফিং রুমে হাজির হয়ে তিনি সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের প্রতি সম্মান নিশ্চিতে কাজ করার অঙ্গিকার জানান দেন।

ব্লিংকেন জানান তিনি এমন এক স্টেট ডিপার্টমেন্ট তৈরি করতে চান যেখান থাকবে সকলের অংশগ্রহণ। বিভিন্ন বিষয়ে শুধু নিজেদের চিন্তাই নয় বরং যাদের ভিন্নমত রয়েছে তাদের কথা ও পরামর্শও আমলে নিবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেন, "এভাবেই সবচাইতে সুন্দর একটা সিদ্ধান্ত বের হয়ে আসে।"

তিনি বলেন, "সকলের পরামর্শ নিয়েই আমি চলব।"

ব্রিফিং রুমে করোনাভাইরাসের কারণে সীমিত সংখ্যক পুল রিপোর্টারদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একিসঙ্গে পাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন তিনি।এর আগে কর্মদিবসের শুরুতে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকর্মীদের উদ্দ্যেশ্য বক্তব্য রাখেন ব্লিংকেন। ভবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্বাগত জানান সাবেক এবং বর্তমান সহকর্মীবৃন্দ।

পুরো বিশ্বের মনযোগ যুক্তরাষ্ট্রের দিকে উল্লেখ করে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, আর পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা জাতির ক্ষত কতটা লাঘব করতে পারব তা দেখতে চাচ্ছে। আমাদের সফলতার উদাহরণগুলোতে অনুপ্রাণিত হয়ে কতটা সামনে অগ্রসর হতে পারব তাদের দৃষ্টি সেদিকেই। আমাদের কূটনীতি দিয়ে বর্তমান সময়ে করোনাভাইরাস, জলবায়ু, অর্থনীতি, গণতন্ত্রের হুমকির মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোত মিত্র এবং সঙ্গীদের নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবকিনা তা দেখতে চাচ্ছে।"

নিজের পূর্বের অভিজ্ঞতার কথা তোলে ধরে ব্লিংকেন বলেন, "যখন আমি ডেপুটি সেক্রেটারি অব স্টেটের দায়িত্ব পালন করেছে তখনি অনুধাবন করেছি স্টেট ডির্পাটমেন্টের মত একটি দপ্তর কে নেতৃত্ব দেবার বিষয় কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে এ দিকটা নিরাপদ রাখতে হয়, ভবিষ্যত পরিকল্পনা বুনন করতে হয় এবং যখন দায়িত্ব পালন শেষে বিদায় নেব তখন যেন পূর্বের চেয়ে ভালো অবস্থায় রেখে যেতে পারি সেটা বিবেচনায় রাখতে হয়।আমি খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে চাই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের পররাষ্ট্রনীতির সুনাম যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে আমি খেয়াল রাখব।"

তিনি বলেন, "পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকর্মীবৃন্দ এবং ইউএসএইড সহযোদ্ধারা যারা আমেরিকার সুনাম বৃদ্ধি করেছেন। আমি বলে বুঝাতে পারবনা আপানাদেরই একজন সহকর্মী হিসেবে আমি কতোটা গর্বিত।"

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "চার বছর আগে আমি যে স্টেট ডিপার্টমেন্ট আমি রেখে গিয়েছিলাম আজ তা পূর্বের জায়গাতে নেই। অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বদলে গেছে পৃথিবীও। ডিপার্টমেন্টও বদলে গেছে, আমাদের সেদিকে খেয়ালা রাখতে হবে।"

বর্তমান সময়কে ক্রান্তিকাল ইঙ্গিত করে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন আরও বলেন, "আমরা এর পূর্বে কখনও এরকম সময় অতিবাহিত করিনি। এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণে অঙ্গিকারাবদ্ধ প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আমরা দ্রুতই এমন অবস্থায় ফিরে যেতে চাই যেখানে আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে যে- আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তিটা মজবুত।এক্ষেত্রে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা রয়েছে। আমি মনে করি আস্থা এবং বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে আমরা একাজটা শুরু করতে পারি।"

তিনি বলেন, "আমি এটাকেই সবচাইতে বেশী গুরুত্ব দিব।আমাদেরকে এমন এক পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে যেটা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান শক্তিশালী করবে।"

এসজে/