জাতিসংঘে রোজিনাসহ নির্বাসিত ৩ সাংবাদিক প্রসঙ্গ

গ্রেফতারের ঘটনা অবশ্যই উদ্বেগজনক, সাংবাদিকতা হতে হবে মুক্ত ও অবাধ: মুখপাত্র ডোজারিক

গ্রেফতারের ঘটনা অবশ্যই উদ্বেগজনক, সাংবাদিকতা হতে হবে মুক্ত ও অবাধ: মুখপাত্র ডোজারিক

জাতিসংঘ সংবাদদাতা

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্থা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ বলেছে, “বিষয়টির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এটি স্পষ্টতই উদ্বেগের বিষয়।”

মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গ্রেপ্তার, হয়রানি এবং দেশের আরও তিন নির্বাসিত সাংবাদিককে ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠী কর্তৃক হুমকি প্রদান প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক এ প্রতিক্রিয়া জানান।

ব্রিফ্রিংয়ে জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, “বাংলাদেশ বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। মুক্ত সাংবাদিকতার নূন্যতম সুযোগই এখন বাংলাদেশে অবশিষ্ট নেই। সেলফ সেন্সরশিপ-এখন দেশের সাংবাদিকতার একটি কালো অধ্যায় হিসেবে যোগ হয়েছে। এইতো গতকালকে শীর্ষস্হানীয় বাংলা দৈনিকের সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পূর্বে ৫ ঘন্টারও বেশী সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিসে আটকে রাখা হয়। তাকে সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন রোজিনা। রোজিনা ইসলাম এখন কারাগারে আটক। এ কর্তৃত্ববাদী সরকারে শীর্ষ থেকে সকল পর্যায়ে দূর্নীতিগ্রস্ত। আরেকটি গুরতর বিষয় হচ্ছে, দেশের বাইরে থেকে যেসকল নির্বাসিত সাংবাদিক মুক্ত মত প্রকাশ করছেন তাদেরকে নিয়ে। আমি অন্ততপক্ষে এরকম ৩ জন সাংবাদিককে চিনি, যেমন নিউইয়র্কে থাকা বাংলাদেশী সাংবাদিক ড. কনক সারওয়ার ও ইলিয়াস হোসেন এবং বাইরে তাসনিম খলিল। দেশের বাইরে থেকেও তারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের পক্ষ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত পাচ্ছেন। এ বিষয়ে আপনাদের পর্যবেক্ষণ কী? দেশে এবং বিদেশে দুই জায়গাতেই সাংবাদিকতা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।”

জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশে যে সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে নিয়ে প্রকাশিত গণমাধ্যমের খবর আমাদের নজরে এসেছে। অবশ্যই আমরা নজর রাখছি। এটা স্পষ্টতই উদ্বেগজনক বিষয়।”

বাঁধা প্রদান ছাড়াই সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে ডোজারিক বলেন, “বিষয়টিতে আমাদের অবস্থান খুবি স্পষ্ট। সাংবাদিকদের কোনোভাবেই হয়রানি বা শারীরিক নির্যাতন করা যাবেনা। মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। সেটা বাংলাদেশ কিংবা পৃথিবীর যেকোনো জায়গাই হোক না কেনো।”

তিনি আরও বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়টাতে বিশ্বে সাংবাদিকরা যে ভূমিকা রাখছেন তা আমরা সবাই পর্যবেক্ষণ করেছি। তারা যেখানে, যে অবস্থায় কাজ করুক না কেনো তাদের কাজের ক্ষেত্র হতে হবে বাঁধাহীন।”

কেএইচ/