বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক

আগামী নির্বাচনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের; বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ব্লিংকনের হস্তক্ষেপ চাইলেন মোমেন

আগামী নির্বাচনে নজর যুক্তরাষ্ট্রের; বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ব্লিংকনের হস্তক্ষেপ চাইলেন মোমেন

মুশফিকুল ফজল আনসারী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ওয়াশিংটন

বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম পূর্তী উপলক্ষে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে অ্যান্টনি ব্লিংকন বলেন, ৫০ বছরের গৌরবময় অতীতকে স্বাক্ষী রেখে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আগামী ৫০ বছরের জন্য জোরালো করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মোকাবিলা ও রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয়ের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করেন ব্লিংকন।

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন করোনা টিকা সবরারাহ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “যখন আমি গৃহহীন, চাকুরীহীন এবং বাস্তুচ্যুত ছিলাম, তখন এই যুক্তরাষ্ট্রই আমাকে আশ্রয় দিয়েছে।”

বৈঠকের মূলপর্বে উঠে আসে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার, শ্রম অধিকার, র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর, রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তর সহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ।

আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, গ্রহনযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয় এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা জানান দেন ব্লিংকন। জবাবে মোমেন বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা। যোগ করেন, সব দল নির্বাচনে আসতে চায় শুধু একটি দল ( বিএনপি) ছাড়া। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়, কোথাও কোথাও বিজয়ীও হয়। বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে ব্লিংকনের সহযোগিতা চান মোমেন।

র‍্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধের জবাবে ব্লিংকনের সাফ জবাব এ ব্যাপারে তার করনীয় কিছুই নেই। এই নিষেধাজ্ঞা বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি থেকে আরোপ করা হয়েছে। তিনি মানবাধিকার পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে মোমেন জানান, আপনাদের বিভিন্ন রিপোর্টেই বলা হচ্ছে, গত ৪ মাসে একটিও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। র‍্যাবের উপর আনীত অনেক অভিযোগ তদন্ত করা হয়েছে এবং আগামীতেও করা হবে।

শ্রমঅধিকার নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন ব্লিংকন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়েও জানতে চান তিনি।

শেখ মুজিবুর রহমান হত্যামামলায় অভিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত রাশেদ চৌধুরীকে ফেরতদানের বিষয়টিও বাংলাদেশ তরফে উত্থাপিত হয় বৈঠকে। যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে দুই দেশ একযোগে কাজ করবে বলে বৈঠকে একমত পোষণ করা হয়।