হোয়াইট হাউসে জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেল

দুই কোরীয় বৈঠকের উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ট্রাম্প

দুই কোরীয় বৈঠকের উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় ট্রাম্প

হোয়াইট হাউস থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, এপ্রিল ২৭ (জাস্ট নিউজি): ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়াল ম্যাক্রনের যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই হোয়াইট হাউসের আতিথেয়তা গ্রহণে হাজির জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল। রাষ্ট্রীয় ভোজ কিংবা বর্ণাঢ্য অভিবাদন মার্কেলের ভাগ্যে না জুটলেও তার প্রতি মনোযোগের কমতি ছিলোনা হোয়াইট হাউসের। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের খুঁটিনাটি নানা বিষয় ঝালাই করতে ওয়াশিংটনে শুক্রবার ব্যস্ত সময় কাটালেন এই দুই বিশ্বনেতা। পারস্পরিক বাণিজ্য ছাড়াও আলোচ্য সূচীর বড় জায়গা জুড়ে ছিলো দক্ষীণ কোরিয়াকে বাগে আনার নাটকীয় অগ্রগতি, ইরান ডিল ও সিরিয়া পরিস্থিতির মতো উল্লেখ যোগ্য বিষয়।

শুক্রবার দুপুরে হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মানির প্রতি বন্ধুত্বের হাত আরেক দফা প্রসারিত করার কথা ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। জবাবে মাঝে মধ্যে মতোপার্থক্যের বিষয়টি জানান দিয়ে সখ্যতায় বিন্দুমাত্র কোনো হেরফের নেই বলে পরিস্কার জানিয়ে দিলেন চ্যান্সেলর মার্কেল।

সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে ঐতিহাসিক দুই কোরীয় বৈঠকের বিষয়টি। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নাটকীয় বদল ঘটেছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর কোরিয় নেতা কিমের সঙ্গে বাদানুবাদের পরও যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।

তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক বিরাজ করছে। দ্বিপাক্ষিক একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। মাত্র কয়েক মাসেই সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন ঘটেছে। হাতে গুনা একদিন এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আমরা সবাই জানি।”

দুই কোরিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠকের জন্য উভয় নেতাকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ক’সপ্তাহের মধ্যেই উত্তর কোরিয় নেতা কিমের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, দশকের পর দশক আর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে এ বৈঠকটির জন্য। কি ঘটবে সেটা দেখার জন্য আসুন অপেক্ষা করি।

কোরীয় উপদ্বীপকে যুক্তরাষ্ট্র পরামাণবিক অস্ত্র মুক্ত দেখতে চায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


শান্তির বার্তার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বলেন, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচন করে দিয়ে আমরা শান্তি, সমৃদ্ধি আর সৌহার্দের বিস্তৃতি ঘটাতে চাই। আর এটা শুধু কোরীয়দের জন্য না পুরো পৃথিবীর জন্য।

পবিত্র ভূমি জেরুজালেমে দূতাবাস স্থাপনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পক্ষে আবারো জোরালো অবস্থান তুলে ধরেন ট্রাম্প। আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আভাস দিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে পূর্বসুরিদেরও একহাত নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আপনারা জানেন, জেরুজালেম এমন একটি বিষয় যেখানে দূতাবাস করার বিষয়টি নিয়ে বছরের পর বছর প্রতিজ্ঞা করে আসা হচ্ছিলো। সাবেক প্রেসিডেন্টরা বছরের পর বছর এটি নিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন। তারা কেবল লোক দেখানোর জন্য এ প্রতিজ্ঞা করেছে এবং কখনোই এটা করে দেখানোর সাহস করতে পারেনি। আমি এটা করে দেখিয়েছি। আর তাই আমি সেখানে যেতে পারি।”

তবে ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় দূতাবাস নির্মাণের প্রস্তাব নাকোচ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন- এতো অর্থ ব্যয় করে সেখানে দূতাবাস নির্মাণের কোনো অর্থ হয়না। এখানে মাত্র ৩ থেকে ৪ লাখ ডলার খরচ করার অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

ভ্যাটার্নস এ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারী রনি জ্যাকসনে মনোয়নে বাঁধা হয়ে দাড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্রের হাউসের প্রতিও বিষোদগার করতে ছাড়েননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, “ওয়াশিংটন অনেক ন্যাস্টি হয়ে গেছে। অনেক ছোট মনের পরিচয় দিচ্ছে”। এ সময় পাশে অনেকটা অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে থাকা জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেলের দিকে ফিরে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি অবশ্য এসবের কিছু জানেন না।’

(জাস্ট নিউজ/জিএস/একে/১০২০ঘ)