বিরোধীদল, মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের ওপর অব্যাহত নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে আওয়ামী লীগ: ফ্রিডম হাউজ

বিরোধীদল, মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের ওপর অব্যাহত নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে আওয়ামী লীগ: ফ্রিডম হাউজ

বিরোধীদল, সরকারবিরোধী মিডিয়া এবং সুশীল সমাজের ওপর অব্যাহত নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। 

গণতন্ত্র, রাজনৈতিক স্বাধীনতা আর মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ফ্রিডম হাউজ তাদের ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারে এ মন্তব্য করেছে।

সংস্থাটির স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪০।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। আর এটিকে রাজনৈতিকভাবে মদদ যুগানো হচ্ছে।

মানবাধিকার লংঘন প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যথাযথ পদক্ষেপ নেবার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনী একধরনের জবাবদিহিতা ছাড়াই মানবাধিকার লংঘন করে যাচ্ছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর মধ্য রয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর পরিচালিত সহিংসতা এবং বৈষম্য। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পারিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর পরিচালিত সহিংসতা এবং বৈষম্যের কথা উল্লেখ করা যায়।

রিরোধীদলের ওপর নিপীড়ন প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে দলটির প্রধানসারির নেতাদের।

এতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচন বয়কট করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালে যখন দলটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় তখন ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছিলো সরকার। হাজারো বিরোধী নেতা-কর্মী, নির্বাচনের প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো এবং আক্রমণের শিকার হয় অনেকেই। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো হয়। বর্তমানে কার্যত তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমগুলোকে অনেক ধরনের চাপ মোকাবেলা করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে একের পর এক মামলা, হয়রানি এবং প্রাণঘাতি হামলা। ২০২২ সালে সাংবাদিকরা সরকারের সমালোচনা করে প্রতিবেদন লেখার কারণে হয়রানি এবং হামলার শিকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সরকার যেকারো বাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারে, ওয়ারেন্ট ছাড়াই আটক করতে পারে। অনলাইনে যেকোনো ধরনের সমালোচনাকে অপরাধ হিসেবে দেখানো হয় এ আইনের মাধ্যমে। সাংবাদিকরা এ আইনটির কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় রাজনীতিকরণ এবং চাপপ্রয়োগের সংস্কৃতি চালু রয়েছে। আইনমন্ত্রণালয় আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি এবং বদলি নিয়ন্ত্রণ করে।বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় রাজনীতিকরণ এবং চাপপ্রয়োগের সংস্কৃতি চালু রয়েছে। আইনমন্ত্রণালয় আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি এবং বদলি নিয়ন্ত্রণ করে।

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেয়ার কারণে হুমকি পাওয়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ২০১৭ সালে অবসর নেন এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসেন। ২০২১ সালে তার অনুপস্থিতিতে এক দুর্নীতির মামলায় ১১ বছরের জেল দেওয়া হয়। 

এমএন/