রোজগার্ডেনে ট্রাম্প -আ্যাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন

কিমের সঙ্গে বৈঠক ‘নামকাওয়াস্তে’ নয়, শুভ সূচনা: যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট

কিমের সঙ্গে বৈঠক ‘নামকাওয়াস্তে’ নয়, শুভ সূচনা: যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট

হোয়াইট হাউস থেকে মুশফিকুল ফজল আনসারী, ৭ জুন (জাস্ট নিউজ): উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে আসন্ন বৈঠক নামকাওয়াস্তে কিংবা ফটোবাজি নয় বরং তার চাইতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু, এর মাধ্যমে দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শুভ সূচনা হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত যৌথ সংবাদসম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চান- উত্তর কোরিয় নেতা কিমের সঙ্গে আপনার বৈঠককে যদি সমালোচকরা শুধুই ফটোশূট বলে মন্তব্য করেন তাহলে কি বলবেন?

সাংবাদিকের এমন প্রশ্ন রাখ-ঢাক না করেই ট্রাম্প বলেন, এ বৈঠক কেবল ফটোবাজি বিষয় নয়, এটা তার চাইতেও বেশি কিছু। আমি মনে করি এটা একটা প্রক্রিয়ার সূচনা, যেটা এর আগেও বহুবার বলেছি।

এক মিটিংয়ে সব সমাধা হয়না মন্তব্য করে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি বৈঠকটি হয় তবে তা হবে চমৎকার বিষয়। আপনারা জানেন দীর্ঘদিন এ বিষয়টির বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা হচ্ছে। এর বাইরে এর আগে দুই দেশের মধ্যে অনেক শত্রুতা আর ঘৃণা জমাট ছিলো।

বৈঠকটি কোনো ফটোশূট হবে না মন্তব্য করে ট্রাম্প আরো বলেন, এ বৈঠকের মাধ্যমে কিছুই না হোক অন্তত দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের শুভ সূচনা হবে। যেকোনো চুক্তিতে পৌঁছার আগেই এটা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। হতে পারে কাংখিত বিষয়টি এক চুক্তিতেও হতে পারে!

উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত হতে হবে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি তারা পরমাণু অস্ত্রমুক্ত না হতে চায় তাহলে সেটা গ্রহণযোগ্য বিষয় হবে না।

অবরোধের কথা ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা অবরোধের বিষয়টি একদম ঝেড়ে ফেলে দিতে পারি না কারণ এটি একটি মোক্ষম অস্ত্র। কিন্তু আমি এটি নিয়ে এখন অগ্রসর হতে চাচ্ছি না।

পূর্বসুরিদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যেটা অতীতের প্রেসিডেন্টরা পারেনি, যেটা আরো আগে হবার কথা ছিলো, সে বিষয়টা এখন ঘটতে যাচ্ছে।

ইরানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ট্রাম্প বলেন, দেশটির উপর ভয়ংকর রকমের অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। আরা তারা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। তিনি বলেন, দুই মাস আগের ইরান আর এখনকার ইরানের মধ্যে তফাত দেখতে পাচ্ছি আমি।

সংবাদ সম্মেলনে কিমের সঙ্গে আসন্ন বৈঠক ফলপ্রসূ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, এটা খুবি উত্তেজনাপূর্ণ সভা হবে। লোকদেরকে যুক্তরাষ্ট্র এটা জানান দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র কখনো শিখতে যায়না কারো কাছে!

ট্রাম্প বলেন, বৈঠক যদি ভালোভাবে সম্পন্ন হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই তাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আমি মনে করি, তিনি এতে সম্মতি দেবেন। এমনটিই ঘটবে। এসময় কোরিয়া যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি টানার বিষয়েও কথা বলেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, সম্ভব হলে তিনি কোরিয়া যুদ্ধ সমাপ্ত করার জন্য কিমের সঙ্গে একটি চুক্তি করবেন। তার ভাষায়, ‘আমরা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারি, এটা হবে প্রথম পদক্ষেপ। আমরা এ বিষয়ে অন্যদের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সম্ভবত এটাই বৈঠকের সবচেয়ে সহজ অংশ। বৈঠকের কঠিন অংশ আরো পরে।

ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খুবি হৃদ্যতাপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। কিমের সঙ্গে বৈঠকে অ্যাবের বৈঠকের পূর্বে এ সফরকে খুবি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অ্যাবে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র- উত্তর কোরিয়া সম্মেলনে পূর্বে এখানে আসতে পেরে আমি খুশি। সম্মেলন নিয়েও বৈঠকে আলোচনার সুযোগ হয়েছে। আসন্ন বৈঠক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।

কিমের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের সাফল্য কামনা করে অ্যাবে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মেলনটি সফল হোক এ আশা করছি। আর দৃঢ়তার সঙ্গে এটাও জানাতে চাই যুক্তরাষ্ট্রের পাশেই আছে জাপান।

তিনি জানান, বৈঠকে উত্তর কোরিয়া ছাড়াও বাণিজ্য, বিনিয়োগ আর সহযোগিতা নিয়েও ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

(জাস্ট নিউজ/জিএস/০৩২০ঘ)