৯ বছর পর সেমিতে ব্রাদার্স, চ্যাম্পিয়ন আরামবাগের বিদায়

৯ বছর পর সেমিতে ব্রাদার্স, চ্যাম্পিয়ন আরামবাগের বিদায়

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : দুই মাঝারি মানের দলের কি অসাধারন ও চিত্তকর্ষক ম্যাচ। কি ছিল না আরামবাগ এবং ব্রাদার্সের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে? ৬ গোল। এর চারটিই দৃষ্টিনন্দন। ম্যাচে লালকার্ড পান দুই ফুটবলার। প্রতি দলের একজন করে। ৩-৩ এ ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ৩-৩ এ টাইব্রেকারেরও সমাপ্তি। এরপর সাডেন ডেথ এ এসে জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি।

দারুন উপভোগ্য এই ম্যাচ জিতে ব্রাদার্স এখন ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে। গোপীবাগের দলটির এই শেষ চারে খেলাটা আবার ৯ বছর পর। ২০০৯ সালে প্রথম সুপার কাপে তারা সর্বশেষ সেমি ফাইনালে খেলেছিল। হারের ফলে বিদায় হল স্বাধীনতা কাপের গতবারের চ্যাম্পিয়ন আরামবাগের। ম্যাচে অনেক ঘটনা থাকলেও ম্যাচ সেরা হয়েছেন ব্রার্দাসের গোলরক্ষক সুজন চৌধুরী। টাইব্রেকার এবং সাডের ডেথ মিলে দুটি শট ঠেকান তিনি। এই সুজন টাইব্রেকার ঠেকিয়ে ২০১১ সালে ফরাশগঞ্জকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে ছিলেন স্বাধীনতা কাপেই।

সমান তালে লড়াই দিয়ে শুরু হয় এই কোয়ার্টার ফাইনাল। শুরুতে ব্রাদার্স দুটি গোলের চান্স মিস করে। এরপর ১২ মিনিটে আরামবাগ এগিয়ে যায় অধিনায়ক রবিউল হাসানের গোলে। পল এমিলির কাটব্যাক থেকে তার ডান পায়ের সাইড ভলি জালে। ২৫ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান লিমা লিওনার্দোর শট ক্রসবারে প্রতিহত হলেও ৪৩ মিনিটে তার হেডেই সমতা। বলটি আসে সাফির ক্রস থেকে। ৫৩ মিনিটে ফের লিড আরামবাগের। এবারও এমিলি- রবিউল কম্বিনেশন। এমিলির পাস থেকে রবিউলের বক্সের বাইরে থেকে নেয়া বাম পায়ের তীব্র শটে পরাস্ত ব্রাদার্স কিপার।

তবে এই অগ্রবর্তী অবস্থান বেশীক্ষন স্থায়ী হয়নি। ৬৫ মিনিটে সাফির ক্রসে চলন্ত বলে মান্নাফ রাব্বীর ভলি বোকা বানায় আরামবাগ কিপার মাজহারুল ইসলাম হিমেলকে। ৭৭ মিনিটে ব্রাদার্স এগিয়ে যায় পানামার ড্যানিয়েলের দর্শনীয় শটে। বক্সের বাইরে থেকে শট নেন তিনি। এই গোল দিয়েই জার্সী খোলার অপরাধে মাঠ ছাড়তে হয় ড্যানিয়েলকে। আগে একটি হলুদ কার্ড পাওয়ায় গোল দিয়ে জার্সী খোলার অপরাধে রেফারী জালাল উদ্দিন তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে বহিস্কার করেন। প্রতিপক্ষ ১০ জনে পরিনত হওয়ার সুবাদে আরামবাগ ৮৫ মিনিটে সমতা আনে পল এমিলির হেডে। এবার রবিউলের কর্নারে তার ব্যাক হেডে গোল।

৩-৩ এ ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে কোনো দলই গোল পায়নি মিসের কারনে। আরামবাগের ম্যাথু এবং ব্রাদার্সের রাব্বী সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। এই সময়ে ১১৭ মিনিটে আরামবাগের সারোয়ার জামান নিপু লালকার্ড পান বিপক্ষ খেলোয়াড়কে লাথি মারায়।

টাইব্রেকারে আরামবাগের রাজন, আবু সুফিয়ান জাহিদ এবং কিংসলে গোল করলেও রবিউলের শট ঠেকান সুজন। পোস্টে মারেন রকি। ব্রাদার্সের দুই ব্রাজিলিয়ান লিমা ও এভারটন ব্যর্থ গোল করতে। লিমার শট পোস্টে লাগে। এভারটন মারেন বারের অনেক উপর দিয়ে। গোল করেন আশরাফুল, মান্নাফ রাব্বী ও ইরাকী মুয়াদ খালিদ। ৩-৩ এ টাইব্রেকার শেষ হওয়ার পর সাডেন ডেথ এ ব্রাদার্সের খান মোহাম্মদ তারা গোল করলেও আরামবাগের ম্যাথু চিনেডোর শট রুখে দেন সুজন। ফলে ৯ বছর পর ফের কোনো আসরের সেমিতে ব্রাদার্স।

হারের জন্য আরামবাগ কোচ মারুফল হক ফুটবলারদের অনভিজ্ঞতাকে দায়ী করে বলেন , ‘আমাদের ৯০ মিনিটেই জেতা উচিত ছিল। গোল মিস তা হতে দেয়নি।’ ব্রাদার্সের ভারতীয় কোচ সৈয়দ নইমুদ্দিনের মতে, আমরা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম আরামবাগকে। এখন আমরা শিরোপার স্বপ্ন দেখছি।

(জাস্ট নিউজ/এমজে/১১০০ঘ.)