সুপার ওভারে খুলনাকে হারাল চিটাগং

সুপার ওভারে খুলনাকে হারাল চিটাগং

পেন্ডুলামের মতো হয়ে দুললো খুলনা টাইটানস-চিটাগং ভাইকিংস ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চ ছড়ালো। টানটান উত্তেজনা, শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে শেষ হাসি হাসল চট্টলার দল। নির্ধারিত ওভারে খেলা টাই থাকে। ফলে নিষ্পত্তির জন্য ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে খুলনাকে ১ রানে হারায় চিটাগং। অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত এ জয়ে টুর্নামেন্টে জয়ে ফিরল মুশফিক বাহিনী।

জবাবে শুরুতেই হোঁচট খায় চিটাগং। জুনায়েদ খানের শিকার হয়ে ফেরেন হার্ডহিটার মোহাম্মদ শাহজাদ। দ্বিতীয় উইকেটে ইয়াসির আলিকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ভালোই খেলছিলেন তারা। তবে হঠাৎ হার মানেন তিনি। তাইজুল ইসলামের বলে ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এ বাঁহাতি।

পরে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে খেলা তৈরির চেষ্টা করেন ইয়াসির আলি। যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থনও পান। তাতে বন্দরনগরীর দলটির রানের চাকা শ্লথ হয়ে যায়। তা বাড়াতে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বিদায় নেন ইয়াসির। শরিফুল ইসলামের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৩৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৪১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন তিনি।

দুর্দান্ত খেলতে থাকা ইয়াসির বিদায় নিলে ক্রিজে আসেন সিকান্দার রাজা। তবে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি তিনি। রানের খাতা খোলার আগেই ব্র্যাথওয়েটের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন জিম্বাবুইয়ান। কিছুক্ষণ পর শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মোসাদ্দেক হোসেন ফিরলে খেলা জমে ওঠে। দুদলেরই জয়ের আশা থাকে।

তবে এ পরিস্থিতিতে ব্র্যাথওয়েটের বলে শরিফুলের তালুবন্দি হয়ে মুশফিক ফিরলে ম্যাচ হেলে পড়ে খুলনার দিকে। পরে আরিফুল হকের বলে নাজমুল হোসেনকে ক্যাচ দিয়ে দ্রুত ফেরেন নাঈম হাসান। ফলে জয় দেখতে থাকে মাহেলা জয়াবর্ধনের শিষ্যরা।

তবে নাটকের তখনো বাকি ছিল। শেষ ৩ বলে জয়ের জন্য চিটাগংয়ের দরকার ছিল ১৩ রান। পর পর ২ বলে ২ ছক্কা মেরে সমীকরণ মিলিয়ে ফেলেন রবি ফ্রাইলিংক। কিন্তু শেষ বলে সিঙ্গেলস নিতে পারেননি তিনি। রানআউটে কাটা পড়েন এ আফ্রিকান। ফলে ম্যাচ টাই হয়ে যায়। বৃথা যায় তার ১৩ বলে ১ চারের বিপরীতে ২ ছক্কায় সাজানো ২৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।

এরপর মীমাংসার জন্য ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। যেখানে জুনায়েদ খানের ৬ বলে মাত্র ১১ রান তুলতে সক্ষম হয় চিটাগং। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তালগোল পাকিয়ে ফেলে খুলনা। রবি ফ্রাইলিংকের ওভারে ১০ রান নিতে সামর্থ হয় মাহমুদউল্লাহরা। ফলে বিজয়োল্লাসে মাতে মুশফিক ব্রিগেড। শেষ চট্টগ্রামের জয়ের নায়ক ফ্রাইলিংকই।

এর আগে টস জিতে খুলনাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান চিটাগং অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। উড়ন্ত সূচনা করেন দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। তবে হঠাৎই খেই হারান স্টার্লিং। নাঈম হাসানের বলে আবু জায়েদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ওপেনিং সঙ্গী হারানোর পরপরই রবি ফ্রাইলিংকের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ২০ রানে ফেরেন জুনায়েদ সিদ্দিকী।

পরে খেলা ধরেন মাহমুদউল্লাহ ও মালান। প্রথমে ধীর-লয়ে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করেন তারা। দুজনের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন গড়ে উঠলে ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি। রীতিমতো চোখ রাঙান এ জুটি। মালানকে ফিরিয়ে সেই চোখ রাঙানি থামান আবু জায়েদ। ফেরার আগে ৪৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। তাতে লড়াকু পুঁজির পথেই থাকে খুলনা।

খানিক বাদেই সানজামুল ইসলামের শিকার হয়ে ফেরেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। সেই রেশ না কাটতেই তার দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরের পথে ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফেরার আগে ৩১ বলে ৪ চারে ৩৩ রান করেন অধিনায়ক। এরপর খালেদ আহমেদের বলি হয়ে যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেটে ১৫১ রান তুলতে সক্ষম হয় মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।

এমঅাই