ইংল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি বাংলাদেশ

শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করার পর বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে লড়াই করে হেরে যায় বাংলাদেশ। তাই ২ খেলায় ২ পয়েন্ট নিয়ে আগামীকাল নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে টাইগাররা। এ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় ফেবারিট স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ২ খেলায়২ পয়েন্ট ইংলিশদেরও। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের ১২তম ম্যাচটি। ম্যাচের প্রকৃতি নিয়ে চিন্তায় বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। কার্ডিফে আজ সকাল ৮টা থেকেই বৃষ্টি অবিরামভাবেই চলছে। তবে বিকেলে থেমে গেলে, আবারও বৃষ্টির হবে বলে জানা গেছে। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

দুর্দান্তভাবে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করে বাংলাদেশ। শক্তিশলী দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে দেয় টাইগাররা। ওভালের মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের ৮০ বলে ৭৮, সাকিব আল হাসানের ৮৪ বলে ৭৫ ও শেষদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৬ রানের উপর ভর করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের বড় সংগ্রহ দাড় করায় বাংলাদেশ।

জবাবে বাংলাদেশের দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত বোলিং-এর সাথে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান মেহেদি হাসানের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং-এর সামনে পড়ে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৯ রানের বেশি করতে না পরলে হারের লজ্জা পায় প্রোটিয়ারা।

দুর্দান্ত জয় নিয়ে ওভালেই নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। কিন্তু ঐ ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি টাইগাররা ব্যাটসম্যানরা। তবে এবারও ব্যতিক্রম ছিলেন বাংলাদেশের প্রান সাকিব। ৬৮ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। তার হাফ-সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৪ বল বাকী থাকতে ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

জয়ের জন্য ২৪৫ রানের টার্গেটে সহজ জয়ের পথে হাটতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ৩১ ওভারে ২ উইকেটে ১৬০ রান তুলে ফেলে কিউইরা। কিন্তু সহজেই ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার দল এখন আর নয় বাংলাদেশ। বোলিং নৈপুন্যে দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে আসে টাইগাররা। ৪৭তম ওভারের তৃতীয় বলে ২৩৮ রানে নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হয়নি টাইগারদের। ২ উইকেটে হারের স্বাদ নিতে হয় মাশরাফির দল।

তাই একটি জয় ও হার নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে বাংলাদেশের। ইংলিশদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সাফল্য খুবই কম। ২০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে মাত্র ৪টিতে জয় পেয়েছে তারা। তবে এই কার্ডিফে বাংলাদেশের অবিস্মরনীয় জয় আছে দু’টি। ২০০৫ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়াকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে অসিদের ৫ উইকেটে হারায় টাইগাররা। অ্যাশ ১০০ রান করেন।

ঐ জয়ের পর ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্র্রফিতে গ্রুপ ‘এ’র ম্যাচে এই কার্ডিফেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচে সাকিব ১১৪ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত ১০২ রান করেন। ঐ জয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলো বাংলাদেশ। তাই কার্ডিফের ঐ জয় কাল যে বাংলাদেশকে চাঙ্গা করবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

২০০০ সালে প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। প্রথম ১২ ম্যাচেই ইংলিশদের কাছে হেরে যায় টাইগাররা। তবে পরের আট দেখায় চারবার জয় পায় বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের ১ জুন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ দেখায় ৮ উইকেটে হারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মত দুর্দান্ত জয় নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করে ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৪ রানের ব্যবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করে ইংলিশরা। কিন্তু পরের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয় স্বাগতিকরা। ১৪ রানে ম্যাচ হারে ইংল্যান্ড। তাই বাংলাদেশের মত ২ খেলায় ২ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে ইংলিশরা।

বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মোসাদ্দেক হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান।

ইংল্যান্ড দল : ইয়োইন মরগান (অধিনায়ক), মঈন আলী, জোফরা আর্চার, জনি বেয়ারস্টো, জশ বাটলার, টম কারান, লিয়াম প্লাংকেট, লিয়াম ডসন, আদিল রশিদ, জো রুট, জেসন রয়, বেন স্টোকস, জেমস ভিন্স, ক্রিস ওকস, মার্ক উড।