ইংলিশদের রানের পাহাড়, জিততে হলে টাইগারদের প্রয়োজন ৩৮৭

ইংলিশদের রানের পাহাড়, জিততে হলে টাইগারদের প্রয়োজন ৩৮৭

বাংলাদেশকে ৩৮৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে ইংলিশরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আনয়াসে ৬ উইকেটে ৩৮৬ রান সংগ্রহ করে ইংলিশরা। ফলে জিততে হলে বিশ্বকাপে রেকর্ড রান তাড়া করেই জিততে হবে টাইগারদের।

বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা গড়েছে আয়াল্যান্ড। এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ২০১১ সালে ৩২৮ রান তাড়া করে ৩ উইকেটে জিতেছে আইরিশরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডটা অবশ্য বাংলাদেশের। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের ৩১৮ রান তাড়া করে টাইগাররা জয় তুলে নেয় ৪ উইকেট হারিয়েই! ফলে বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে কার্ডিফে। রানটা হতে পারতো আরও। শেষ দিকে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে দেওয়াতে কিছুটা হলেও আটকানো গেছে তাদের।

তবে টস জিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে সাবধানি শুরুই করেছিলো ইংলিশরা। প্রথম ম্যাচে জেতার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে চাপে রয়েছে তারা। শুরুর ৫ ওভারের ব্যাটিংয়ে তা প্রভাবও ফেলেছিলো। সাকিবের ঘূর্ণিতে ধীরে ধীরে ওপেনিং জুটির আগ্রাসী সূচনা বড় স্কোরের মঞ্চ গড়ে দেয় ইংলিশদের।

ওপেনিং জুটি অবশ্য শুরুতে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছিলো বাংলাদেশ শিবিরে। ২০তম ওভারে মাশরাফি মুর্তজা ব্রেক থ্রু এনে দিলেও ইংলিশদের চাপে ফেলা যায়নি। ৫১ করে ফিরেছেন বেয়ারস্টো।

এই ওপেনিং জুটিই অসাধারণ শুরু এনে দেয় ইংল্যান্ডকে। ওপেনিং জুটিতে জেসন রয়ের দ্রুত গতির হাফসেঞ্চুরিতে ভর করে রানের চাকা সচল থাকে শুরু থেকে। অবশেষে এই জুটি ভেঙে স্বস্তি ফেরান মাশরাফি। বল কিছুটা লাফিয়ে ওঠায় এজ হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের অসাধারণ ক্যাচে সাজঘরে ফিরতে হয় ধীরে গতিতে হাফসেঞ্চুরি তোলা বেয়ারস্টোকে।

তবে অপরপ্রান্তে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে খেলে নবম সেঞ্চুরি তুলে নেন জেসন রয়। বিদায় নেওয়ার আগে ১৫৩ রান। অপরপ্রান্তে জো রুট কিছুক্ষণ সঙ্গী হলেও কার্যকরী কিছু করতে পারেননি। সাইফউদ্দিনের বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ২১ রানে।

মাঝখানে রয়ে সয়ে খেলে হঠাত ঝড় তোলা শুরু করেছিলেন ওপেনার রয়। ৩৫তম ওভারে মিরাজকে টানা তিন ছয়ে গ্যালারি মাতিয়ে তুলেছিলেন। ছক্কার ঝড়ে ১৫৩ রান পূরণও করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই ওভারের চতুর্থ বলে তাকে মাশরাফির তালুবন্দী করিয়েছেন মিরাজ।

সেট ব্যাটসম্যানরা ফিরে গেলে পেরে ইংলিশদের রানের চাকা চাহিদা মেনে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা সঠিকভাবে করেছেন জশ বাটলার ও অধিনায়ক এউইন মরগান। ঝড়ো গতিতে খেলে বাটলার ২ চার ও ৩ ছয়ে ৫২ ৫৩ রান তুলে ফেলেন। শেষ পাওয়ার প্লেতে তাকে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। ২টি চার ও ৪ ছয়ে বাটলার ফেরেন ৬৪ রানে। অপর প্রান্তে রয়ে সয়ে খেলেন মরগান।

অবশ্য বাটলারের বিদায়ের পর হঠাৎ আসা যাওয়ার মিছিল ছিলো তাদের ইনিংসে। শুরুটা হয় ইংলিশ অধিনায়ককে দিয়ে। ৩৩ বলে ৩৫ রান করে ফেলা এই তারকা হাত খোলবার আগেই ফিরে যান সাজঘরে। ৪৭তম ওভারে তাকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। আগ্রাসী বেন স্টোকসও হাত খুলতে পারেননি। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে মাশরাফিকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রানে। শেষ দিকে প্রত্যাশাত মতো রানের ঘোড়াটা ছোটাতে না পারার ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে ভূমিকা রাখেন মূলত পেসার ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাঙ্কেট। ওকস ৮ বলে ২ ছক্কায় মিনি ঝড় তুলে করেন ১৮ রান। আবার প্লাঙ্কেটও ছিলেন সমান তালে আগ্রাসী। ৯ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৭ রান।

কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে শুরুতে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশ। শুরুর দিকের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে চেপে ধরার কৌশলে ছিলো মাশরাফিরা। ধীরে ধীরে সেই চাপ থেকে নিজেদের মুক্ত করে নেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা বাড়ানো উদ্বোধনী জুটিতে উঠে ১২৮ রান।

সাকিব আল হাসান আক্রমণের শুরুতে এসে ইংলিশদের ঘূর্ণি জালে ফেলবার চেষ্টা করেছেন। তবে সাবধানি ইংলিশরা তা এড়িয়ে চলবার চেষ্টা করেছে।