বাংলাদেশ টেস্ট দলে চমক, ৪ বছর পর ফিরলেন রাজ্জ্জাক

বাংলাদেশ টেস্ট দলে চমক, ৪ বছর পর ফিরলেন রাজ্জ্জাক

ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দলে ডাক পেয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক।

রাজ্জাক বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেবারও শ্রীলঙ্কাই ছিল প্রতিপক্ষ।

১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলা রাজ্জাক ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

চার বছর পর দলে ফিরে আব্দুর রাজ্জাক বিবিসি বাংলাকে বলেন, হঠাৎ পাওয়া এই ডাকে আমি আসলেই খুশি, আমি ভাবতে পারিনি এভাবে ডাক আসবে। কিছুক্ষণ আগে থেকেও সবাই জিজ্ঞেস করছিলো আমি টেস্ট দলে আছি কি না। আমি উত্তর দেইনি। হঠাৎ নান্নু ভাই ফোন দিয়ে জানালেন চট্টগ্রামে দলের সাথে যোগ দিতে।

নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন। তাই নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশ আশাবাদী আব্দুর রাজ্জাক। এই বোলার মনে করেন, জাতীয় দলে খেলাটা সবসময়ই গর্বের। আর এই বয়সে বাংলাদেশে কেউ আশাই করেনা যে সে জাতীয় দলে ফিরবে। সেক্ষেত্রে এটা একটা বড় সম্মান।

রাজ্জাক জাতীয় দলে অনেক দিন না খেললেও নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন। তাই নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশ আশাবাদী তিনি।

তিনি বলেন, ইনজুরির কথা তো বলা যায় না কখন কি হয়? তবে শেষ কদিন ধরেই চার দিনের ম্যাচ খেলছি এবং টেস্ট খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আমি।

নির্বাচকরা তাৎক্ষণিক সাকিবের বদলি হিসেবে দলে আরো দুই স্পিনারকে অন্তর্ভূক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা হলেন বামহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম এবং লেগ স্পিনার তানবীর হায়দার। কিন্তু এই দু’জনের কেউই যে সাকিবের জায়গা পূরণ করার মতো নয়! অনেক ভেবে-চিন্তে নির্বাচকরা আবারো রাজ্জাককে ডাক দিলেন। টেস্ট দলে ডেকে নেয়া হলো অভিজ্ঞ এই স্পিনারকে।

টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ রাতের ফ্লাইটেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছেন রাজ্জাক। সেখানে গিয়ে তিনি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ফোন করে রাজ্জাককে চট্টগ্রামে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন।

মোহাম্মদ রফিকের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে দীর্ঘদিন সার্ভিস দিয়েছেন আবদুর রাজ্জাক। রফিকের বিদায়ের পর তার শূন্যাস্থানটা পূরণ করেন তিনি। প্রায় ৩৬ ছুঁই-ছুঁই এই স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০০৬ সালে, চট্টগ্রামেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। যদিও টেস্টে নিয়মিত ছিলেন না তিনি। ২০১৪ সাল পর্যন্ত আট বছরে খেলেছেন মোটে ১২টি টেস্ট। এর মধ্যে ৬৭.৩৯ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ২৩টি। সেরা বোলিং ৯৩ রানে ৩ উইকেট।

তবে ওয়ানডেতে ছিলেন নিয়মিত। ২০১৪ সালের আগস্টে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, সেন্ট কিটসে। এরপর জাতীয় দল থেকে রাজ্জাকের নাম-দাম পুরোপুরি মুছে ফেলেন তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নতুন নতুন মুখের সমাবেশ ঘটিয়েছেন তিনি; কিন্তু অভিজ্ঞ আবদুর রাজ্জাকের নাম স্মরণেই আনতেন না। এমনকি প্রস্তুতি ক্যাম্পের জন্য ৩০-৩৫ জনের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করলেও সেখানে দেখা যেতো না রাজ্জাককে। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই পারফরম্যান্স করে গিয়েছেন রাজ্জাক।

শেষ পর্যন্ত দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আবারো জাতীয় দলে ডাক পেলেন আবদুর রাজ্জাক। যদিও সেটা সাকিব আল হাসানের বিনিময়ে। টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক ইনজুরিতে পড়ে অনাকাঙ্খিতভাবে মাঠের বাইরে চলে যাওয়ার কারণেই সুযোগ এসেছে রাজ্জাকের সামনে। নিজেকে পুনরায় প্রমাণ করার এই তো সময় রাজ্জাকের সামনে। -বিবিসি

(জাস্ট নিউজ/ডেস্ক/একে/২৩২৬ঘ.)