দেড় মাস ধরে চলা আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ শেষ হচ্ছে আজ রবিবার। ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত লর্ডস গ্রাউন্ডে প্রথম শিরোপা জয়ের মিশনে নামবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। ফাইনালের মহারণে যে দলই জিতুক, বিশ্বক্রিকেট দেখবে নতুন চ্যাম্পিয়ন।
লর্ডসের পরতে পরতে আভিজাত্যের নিদর্শন। যার মধ্যে অন্যতম মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) প্যাভিলিয়ন। ক্রিকেটারদের ড্রেসিংরুম ও ব্যালকনি ছাড়া তিনতলা ভবনের সম্মুখভাগের পুরোটাই ম্যাচের দিন বরাদ্দ থাকে এমসিসি সদস্যদের জন্য। হাজারো ক্রিকেটবোদ্ধার সামনে আজ গৌরবের বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরবেন ইয়ন মরগান নয়তো কেন উইলিয়ামসন।
এর আগে লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনাল হয়েছে চারবার। ইংল্যান্ড এখানে ফাইনাল খেলেছিল একবারই। ১৯৭৯ সালে ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইংলিশদের। ঠিক ৪০ বছর পর পূর্বসূরিদের আক্ষেপ মুছে ফেলার সুযোগ মরগানদের সামনে।
নিউজিল্যান্ডের আক্ষেপ তরতাজা। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দল ২০১৫ বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল সহযোগী আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার কাছ। ভেন্যু ছিল মেলর্বোন ক্রিকেট গ্রাউন্ড। লর্ডসে সে আক্ষেপ মুছে ফেলতে তারাও মুখিয়ে।
সেই দলের ছয় ক্রিকেটার আছেন কিউই শিবিরে। হারের অভিজ্ঞতা এবার মরিয়া করে তুলবে নিউজিল্যান্ডকে। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে উইলিয়ামসন জানিয়ে গেলেন, দেশকে গর্ব উপহার দেয়ার জন্য প্রস্তুত তার দল।
‘চার বছর আগের থেকে আমরা এখন ভিন্ন একটা দল। ভিন্ন আবহ এখানে। এখন দেখা যাক আমরা কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাতে পারি। আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ প্রয়াস খুব সাহায্য করবে ভালো কিছু করতে। যে কারণে আমরা চোখ নিবদ্ধ করছি ভালো ক্রিকেট খেলতে। যাতে আমাদের পারফরম্যান্স দিয়ে সাফল্য নিয়ে আসতে পারি।’
গত আসরে বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। বাজে সময় পেছনে ফেলে দেশের মাটিতে দারুণ ক্রিকেট খেলে ফেভারিট তকমা নিয়ে ফাইনালে উঠেছে তারা। ইংলিশ অধিনায়ক মরগান এবার সর্বোচ্চটা নিংড়ে দিয়ে শিরোপার মুকুট মাথা তুলতে চান।
‘চার বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম, প্রত্যয় ও পরিকল্পনাই আমাদের সামনে সুযোগ নিয়ে এসেছে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরার। আমি মনে করি দেশের সবাই আমাদের সঙ্গে রয়েছে। যে সমর্থন আমরা পেয়েছি তা আমাদের ভাগ্যবান করেছে।’
কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন ফেভারিট মানছেন ইংল্যান্ডকে। তবে স্পটলাইটে না থেকেও বিজয়ের মুকুট পরার প্রত্যয় তার কণ্ঠে।
‘আমি মনে করি ইংল্যান্ড ফেভারিটের খুবই দাবি রাখে। তারা যেভাবে খেলে এসেছে শুরু থেকে, তাতে তারাই ফেভারিট। যাই হোক আমরা ডগ (হাসি)…! আমরা খেলতে চাই এবং ম্যাচটাতে পুরোপুরি মনসংযোগ ঠিক রেখে। বছরজুড়েই দেখছেন, যেকোনো দল যে কাউকেই হারিয়ে দিচ্ছে এবং সেটি ফেভারিট তকমা দূরে সরিয়ে।’
১৯৯২ বিশ্বকাপে শেষবার ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ড। তার আগে ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালে। ১৩ বছরের মধ্যে তিন-তিনবার বিশ্বকাপ ফাইনালে গিয়ে হারা ইংল্যান্ড ২৭ বছর পর আবারও শিরোপার মঞ্চে। এবার পারবে তারা? নাকি টানা দ্বিতীয় সুযোগে বাজিমাত করবে নিউজিল্যান্ড? আজই মিলে যাবে সব প্রশ্নের উত্তর।
এমজে/