টাইগারদের সামনে ১৭৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে ভারত

টাইগারদের সামনে ১৭৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে ভারত

নাগপুরের অঘোষিত এক ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ এবং স্বাগতিক ভারত। সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে যারা জিতবে শিরোপা নিজেদের করে নিবে তারাই। টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট করতে নেমে লোকেশ রাহুল আর শ্রেয়াস আইয়ারের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত সংগ্রহ করে ১৭৪ রান। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন সৌম্য সরকার এবং শফিউল ইসলাম। আর এতেই টাইগারদের সামনে ১৭৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত।

টাইগারদের ফিল্ডিং ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে আসেন শফিউল ইসলাম। ওভারের তৃতীয় বলে রোহিতকে বোল্ড করেন শফিউল ইসলাম। আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে রোহিত শর্মা নামের পাশে যোগ করেন মাত্র ২ রান। রোহিত ফিরে গেলে বেশ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই ব্যাটিং শুরু করেন শিখর ধাওয়ান এবং লোকেশ রাহুল। পাওয়া প্লে'র শেষ ওভারে আবারও বল হাতে আসেন শফিউল ইসলাম। ওভারের তৃতীয় বলে তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইগার অধিনায়কের তালুবন্দী হন ধাওয়ান। এর আগে অবশ্য ১৬ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলেছেন ধাওয়ান।

দুই উইকেট হারানোর পর শ্রেয়াস আইয়ারকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন লোকেশ রাহুল। ব্যাট হাতে চার ছক্কার ফুলঝুরি ঝরাতে শুরু করেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৩৩ বলেই রাহুল তুলে নেন অর্ধশতক। ইনিংসের ১৩তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে আসেন আল আমিন। আর এসেই ওভারের প্রথম বলে নিজের প্রথম শিকারে পরিণত করেন টাইগার বোলারদের ওপর ভয়ংকর তাণ্ডব চালানো লোকেশ রাহুলকে। আল আমিনকে লং অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে লিটন দাসের হাতে বন্দী হন রাহুল। আউট হওয়ার আগে অবশ্য ৭ চারে মাত্র ৩৫ বলে ৫২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে যান রাহুল।

এরপর উইকেটে থিতু হওয়া শ্রেয়াস আইয়ার ভারতীয় দলের হাল ধরেন। ১৫তম ওভারে বল করতে আসা আফিফ হোসেনের প্রথম তিনি বলেই হাঁকান তিনটি ওভার বাউন্ডারি। আর চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম অর্ধশতক। ইনিংসের ১৭তম ওভারে নিজের কোটার শেষ ওভারে বল হাতে আসেন সৌম্য সরকার। রিশব পন্ত সৌম্যকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিস করে বসেন বলটিই, আর এতেই বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে। আর ওভারের পঞ্চম বলে ভয়ংকর শ্রেয়াস আইয়ারকে ফেরান সৌম্যই। তবে তার আগে ৩৩ বলে ৬২ রান করে ভারতের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করেন এই মিডল অর্ডার।

এর আগে রোববার (১০ নভেম্বর) নাগপুরে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এই ম্যাচে যদি বাংলাদেশ জিতে যায় তাহলে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে কোনো সিরিজ জয়ের গর্বিত ইতিহাস রচনা করবে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বদলে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দলে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। ভারতীয় দলে ক্রুনাল পান্ডিয়ার বদলি হিসেবে দলে এসেছেন মনিষ পান্ডিয়া।

এর আগে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ভারতকে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রাজকোটে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফেরে স্বাগতিক ভারত। আর তাই তো নাগপুরের তৃতীয় ম্যাচটি দু’দলের জন্যই এক প্রকার ফাইনাল।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাইম শেখ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।

ভারতীয় একাদশ: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, রিশব পন্ত, মনিষ পান্ডিয়া, শিভম দুবে, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চাহাল, দিপক চাহার এবং খলিল আহমেদ।

ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচ জিতলে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে বাংলাদেশ। আর টাইগারদের হারাতে পারলে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হাতছাড়া করার পর প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে ভারত।