প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

ব্যাটিং ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের বোলারদের ধাঁধার জবাব পেলেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। উমেশ, ইশান্ত, শামি, অশ্বিনদের বলই পড়তে পারলেন না তারা। রীতিমতো খাবি খেলেন টাইগাররা। বলা বাহুল্য, ভারতীয় বোলারদের বলে বিভ্রান্ত হয়ে একের পর একজন সাজঘরের পথ ধরলেন তারা। সেই যাত্রায় সবশেষ যোগ দিলেন এবাদত হোসেন। তাতে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ।

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে বৃহস্পতিবার ইন্দোরে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। এ নিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু করেন তিনি। ক্যারিয়ারে প্রথম এবং ১১তম অধিনায়ক হিসেবে পথচলা শুরু করেন এ টপঅর্ডার। সেই সঙ্গে এ দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করে বাংলাদেশ।

উইকেটে যথেষ্ট ঘাস আছে। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত ছিল আর্দ্রতাও। দারুণভাবে সেটা কাজে লাগান ভারতীয় ৩ পেসার। সর্পিল সুইং আদায় করে নেন উমেশ যাদব। ছন্দময় বোলিং করেন ইশান্ত শর্মা। বাড়তি গতি তোলেন মোহাম্মদ শামি। সেই সঙ্গে ঘূর্ণির জাদু প্রদর্শনী করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

তাতে টালমাটাল হয় বাংলাদেশের টপঅর্ডার। সেই তোড় শামলাতে না পেরে দলীয় ১২ রানে উমেশের শিকার হয়ে ফেরেন ইমরুল কায়েস। এ রেশ না কাটতেই ইশান্তর বলির পাঁঠা হন সাদমান। পরে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে খেলা ধরার চেষ্টা করেন মুমিনুল। তবে তাতে বাদ সাধেন শামি। মিঠুনকে এলবিডব্লিউর ফাদেঁ ফেলেন তিনি।

৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েন টাইগাররা। মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ান মুমিনুল হক। ধীরে ধীরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তারা। পথিমধ্যে মুশফিক দুইবার এবং মুমিনুল একবার জীবন পান। ৩ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে লাঞ্চে যান এ জুটি।

বিরতি থেকে ফিরে ছন্দময় ক্রিকেট খেলতে থাকেন মুমিনুল-মুশফিক। তবে হঠাৎ পথ হারান মুমিনুল। দলীয় ৯৯ রানে অশ্বিনের বল ছেড়ে দিয়ে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। সাজঘরে ফেরত আসার আগে লড়াকু ৩৭ রান করেন পয়েট অব ডায়নামো। ফলে ফের বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

এ পরিস্থিতিতে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অশ্বিনের লাইনের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে সোজা বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ১১৫ রানে তাকে হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিলের মধ্যে ভরসার প্রতীক হয়ে ছিলেন মুশফিক। তবে লব্ধ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ শামির বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরত আসেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

ফেরার আগে সংগ্রামী ৪৩ রান করেন মুশফিক। ফলে ক্যারিয়ারে ১৯তম ফিফটি ছোঁয়া হয়নি তার। সেই সঙ্গে মোহাম্মদ আশরাফুলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ হারান তিনি। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী (৩৮৬) থাকেন লিটল মাস্টারই। ৭ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

মুশফিকের বিদায়ে আকাশ ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের সামনে। তার পরই এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি রানের খাতায় খুলতে পারেননি। ফলে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পান শামি। যদিও সেটা হয়নি। তবে দলীয় হ্যাটট্রিক ঠিকই হয়েছে ভারতের।

৫৪.১ ওভারে লিটনকে স্লিপে কোহলির তালুবন্দি করে লিটন দাসকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরিয়ে সেই কোটা পূরণ করেন ইশান্ত। এতে বাংলাদেশের গুটিয়ে যাওয়াটা হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার। এর জের না কাটতেই রানআউটে কাটা পড়েন তাইজুল ইসলাম। সবশেষ এবাদতকে তুলে নিয়ে মুমিনুলদের মুড়িয়ে দেন উমেশ।

ভারতের হয়ে বিধ্বংসী স্পেলে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন শামি। ২টি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেন উমেশ, ইশান্ত ও অশ্বিন।

এমজে/