আফগানিস্তান সিরিজ : কারা থাকছেন ৩০ জনের প্রাথমিক দলে?

আফগানিস্তান সিরিজ : কারা থাকছেন ৩০ জনের প্রাথমিক দলে?

ঢাকা, ৫ মে (জাস্ট নিউজ) : আগামী জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি টি-২০ সিরিজ খেলতে ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভেন্যু দেরাদুন হলেও এটি আসলে আফগানিস্তানের হোম সিরিজ। সূচি এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে ইতোমধ্যেই ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল চূড়ান্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। খুব শিগগিরই এই দল ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

৩০ সদস্যের এই প্রাথমিক দলে তুষারের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলা খেলোয়াড়ের থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথায়, এটা আপনাদের মনে রাখতে হবে, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা মানে এই নয় যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সে ভালো করবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার সামর্থ্য কত, সেটিও বুঝতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলে এখনই নিতে হবে, এমন কথা নেই। আগে ‘এ’ আর এইচপি দলটা দিই, সেটা দেখেন, তখন বিষয়টা বুঝতে পারবেন।

এদিকে জুনেই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের। এ ব্যাপারে নান্নু আরো বলেন, আপাতত আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে কাজ করছি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে লম্বা সিরিজ। দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি সিরিজও রয়েছে। চ্যালেঞ্জিং সিরিজ সামনে। এবং ব্যাক টু ব্যাক অনেকগুলো খেলা। পাশাপাশি ‘এ’ দলেরও ব্যাস্ত সূচি। সুতরাং এ দলটাকে যোগ করে আমরা একটি কম্বিনেশন দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি।

এদিকে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমসহ জাতীয় দলের বেশ কিছু নিয়মিত খেলোয়াড় ইনজুরিতে আছেন। তবে আফগানিস্তান সিরিজের আগেই তাদের সম্পূর্ণ ফিট পাবেন বলেই আশা করছেন প্রধান নির্বাচক। তাই তাদের নিয়েই দল গঠন করা হচ্ছে বলে জানান নান্নু, আমাদের বিশ্বাস কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু হওয়ার আগে সবাইকে পাবো। নাসিরের ব্যাপারটা একটু আলাদা। কারণ তার ফিরতে ছয় মাসেরও বেশি সময় লাগতে পারে। সে হিসেবে তাকে বাদ রাখা হচ্ছে।

আগামী ১৩ মে থেকে শুরু হবে আফগানিস্তান সিরিজের প্রাথমিক প্রস্তুতি। এতে তাসকিন আহমেদের থাকা নিয়েও ছিল অনিশ্চিয়তা। তবে আশার আলো জাগালেন নান্নু। একটি অনলাইন পত্রিকাকে বলেন, আমরা ডাক্তারের রিপোর্ট তথা মতামতের অপেক্ষায় আছি। সে মতামত হাতে পেয়ে গেছেন নির্বাচকরা। রিপোর্ট ইতিবাচক। ৩০ জনের প্রাথমিক দলে তাই থাকছেন তাসকিন।

তবে ক্যাম্পে ডাক পেলেও তাসকিনের আফগানিস্তানের সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়া নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানান, আপাতত ক্যাম্পে যোগ দেয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা আছে তাসকিনের। তাই তাকে অনুশীলন করার কথা বলেছি আমরা। প্রাথমিক ক্যাম্পে যোগ দেয়ার পর তার পিঠের সমস্যার অবস্থা কি দাড়ায়, তার উপরই নির্ভর করবে আগামী সিরিজগুলোয় খেলা।

র‌্যাঙ্কিংয়ের উন্নতিতে সাকিবের সন্তুষ্টি
আইপিএলে জয়ের প্রচণ্ড চাপটা একপেশে রেখে স্বল্পকালীন ছুটিতে দেশে ফিরেছিলেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। পারিবারিক এক কারণ ছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল নিয়েও ছিল আলোচনার বিষয় নির্বাচকদের সাথে। তা-ও সেরে গেছেন। টেস্ট ও টি-২০ ভার্সনের অধিনায়ক তিনি। ওয়ানডেতে মাশরাফি অধিনায়ক হলেও সেখানেও তার মতটা বেশ গুরুত্বের সাথেই বিবেচিত হয়। মাঝে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে যে উন্নতি তা নিয়েও কথা বলেছেন এ ক্রিকেটার। তবে টেস্টের এ উন্নতি তার কাছে অনেক বড় অর্জন বলেই মনে হয়।

তিনি বলেছেন, আমাদের টেস্টের যে উন্নতি হচ্ছে তা ওই র‌্যাঙ্কিংয়েই প্রমাণিত। সাকিবের এ কথার পেছনে কারণও আছে। ২০০০ সালে অভিষেক টেস্ট ম্যাচ খেলার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নতি এতটা হয়নি। প্রায় এ নিয়ে কথা শুনতে হয়েছে। প্রকাশ্যেও বলেছেন অনেকে। ফলে অনেকটা তিক্ত বিরক্তও ক্রিকেটাররা। বিসিবির পরিচালকেরাও এ নিয়ে বিরক্ত। বেশি টেস্টম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়া থেকে শুরু করে ভালো স্পন্সরের অন্তরায়ও এক পারফরম্যান্স।

কয়েক বছরে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের মান বেড়েছে। পেছনে ফেলে রাখার আর সুযোগ নেই। হোমে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পাশাপাশি অ্যাওয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। উন্নতির পেছনে এসব সাফল্য কাজ দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে থাকতে চায় না। সামনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। যেহেতু ক্যারিবিয়ানদের থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ, তাইতো আসন্ন ওই সফরে টেস্টে জয় চাওয়া স্বাভাবিক। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলা সাকিব জানিয়েছেন ওয়ানডেতে সাত কিংবা ষষ্ঠ স্থানে ওঠার চেয়েও টেস্টে ৮-এ ওঠা অনেক বেশি গৌরবের বলে মনে করেছেন। দীর্ঘদিন টেস্ট আঙিনায় সংগ্রাম করা বাংলাদেশের জন্য সাদা পোশাকে ভালো করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করেন সাকিব। এ ফরমেটে উন্নতির খবরটাই তার কাছে সবচেয়ে বড়।

সাকিব বলেন, আমার মনে হয়, এটা সম্ভবত এখন পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। ওয়ানডেতে ষষ্ঠ বা সপ্তম স্থানের চেয়ে এটার ওজন অনেক বেশি। কারণ আমরা টেস্টে ভালো ছিলাম না, খুব কমই আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে পেরেছি।

সাকিব মনে করছেন, টেস্টে এ উন্নতি দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, আমাদের ক্রিকেটাররা এ অবস্থানে আসার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন। সাকিবের ভাষায়, র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি দিয়েই বোঝা যাচ্ছে, আমরা ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারছি। টেস্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো করা খুব কঠিন। এটা দিয়ে আমাদের নিত্য সংগ্রাম এবং পরিশ্রমকে বোঝাচ্ছে, আইসিসি টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে ৮-এ ওঠা অনেক বড় অর্জন। এর ফলে আমরা বড় ফরম্যাটে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।’

মুশফিকুর রহীমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওই সাফল্য এসেছে। যার হাত ধরে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। সাকিব মুশফিকের পর অধিনায়ক। কিন্তু ইনজুরিতে পরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে আর ক্যাপ্টেনসি করা হয়নি। ম্যাচই তো খেলতে পারেননি তিনি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব চালিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাকিবের অনুপস্থিতি বেশ ভুগিয়েছে। নিজের মাটিতেও শ্রীলঙ্কাকে হারানো যায়নি। সব ঠিক থাকলে আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব ক্যাপ্টেনসি করবেন। ফলে এখন থেকেই দলের প্রতি নজর। ইতোমধ্যে তিনি একমত প্রকাশ করেছেন মাশরাফিকে টেস্টে ফেরানোর জন্য। কারণ মাশরাফির বিকল্প এখনো গড়ে ওঠেনি টেস্ট স্কোয়াডে। ম্যানেজমেন্টও এ নিয়ে ভাবছেন। আজ কালের মধ্যেই দল চূড়ান্ত হতে পারে। সেখানে মাশরাফির নাম টেস্ট স্কোয়াডে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

(জাস্ট নিউজ/জেআর/১৬৩২ঘ.)