ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : বিপিএলের পঞ্চম আসরের ফাইনাল। মুখোমুখি দুই শক্তিশালী দল ঢাকা ডায়নামাইটস ও রংপুর রাইডার্স। হাইভোল্টেজ ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াই দেখার অপেক্ষাতেই ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে সেই রোমাঞ্চে জল ঢেলে দিলেন ক্রিস গেইল। তার তাণ্ডবে ফাইনালটিকে একপেশে বানিয়ে ফেলে রংপুর। একক আধিপত্য বিস্তার করে ঢাকাকে ৫৭ রানে পরাজিত করে বিজয় উৎসব করে মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব। ক্রিস গেইলের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রানের পাহাড় গড়ে রংপুর। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকা ডায়নামাইটস।
বিপিএলে এটি রংপুরের প্রথম শিরোপা। অন্যদিকে আগের চার আসরে তিনবার ফাইনালে ওঠে তিনবারই শিরোপা জয় করা ঢাকা চতুর্থ ফাইনালে বড় হার সঙ্গী করে মাঠ ছাড়ে।
রংপুরকে শিরোপা জিতিয়ে নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেলেন মাশরাফি। এই নিয়ে চারবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠেন তিনি। চারবার অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জয়ের উৎসব করেন মাশরাফি।
ঢাকার হয়ে জহুরুল ইসলাম সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন। এছাড়া সাকিব ২৬ এবং এভিন লুইস করেন ১৫ রান।
রংপুর রাইডার্সের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সোহাগ গাজী ও নাজমুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নেন মাশরাফি, রুবেল হোসেন ও রবি বোপারা।
রান পাহাড়ের পেছনে ছুটতে গিয়ে প্রথম ওভারেই হোঁচট খায় ঢাকা। মাশরাফির করা ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন মেহেদী মারুফ। দ্বিতীয় ওভারে ফের রংপুরের উল্লাস। এবার সোহাগ গাজীর করা ওভারের তৃতীয় বলে আকাশে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন জো ডেনলি।
ঢাকা ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ফের আঘাত হানেন গাজী। এবার তার করা চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে মাশরাফির দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন এভিন লুইস। পরের ওভারে কিয়েরর পোলার্ডকে গেইলের শিকার বানিয়ে ঢাকার হার সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন রুবেল।
পঞ্চম উইকেটে সাকিব ও জহুরুল মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এই দুজন ২২ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় থেকে দলকে উদ্ধার করেন। তবে তিন ওভারের ব্যবধানে সাকিব, মোসাদ্দেক ও আফ্রিদির বিদায়ে বড় হারের পথে চলে যায় ঢাকা।
নাজমুলের করা নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হয়ে সাকিব ফিরে গেলে ঢাকার বড় হারের পথ তৈরি হয়। বোপারার করা দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোসাদ্দেক বোল্ড হয়ে ফিরে গেলে বিজয়-উৎসবের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে রংপুর। নাজমুলের করা ১১তম ওভারের তৃতীয় বলে আফ্রিদি রুবেলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলে হারের ক্ষণ গুনতে শুরু করে সাকিবের দল।
বিপর্যয়ের মুখে একপ্রান্ত আগলে রাখেন জহুরুল। তবে জহুরুল ও নারিনের ব্যাটিং শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমায়।
এর আগে গেইলের তাণ্ডবে রানের পাহাড় গড়ে রংপুর রাইডার্স। দলীয় ৬ রানের মাথায় জনসন চার্লসের উইকেট হারায় রংপুর। এরপর গেইল ও ম্যাককালাম মিলে ১০৭ বলে ২০১ রানের হার না মানা জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন।
গেইল ৬৯ বলে ৫টি চার ও ১৮টি ছক্কার সাহায্যে ১৪৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন। অন্যদিকে ম্যাককালাম ৪৩ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৫৭ রানে জয়ী রংপুর রাইডার্স।
রংপুর রাইডার্স ইনিংস: ২০৬/১ (২০ ওভার)
(জনসন চার্লস ৩, ক্রিস গেইল ১৪৬*, ব্রেন্ডন ম্যাককলাম ৫১*; মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৩২, সাকিব আল হাসান ১/২৬, সুনিল নারিন ০/১৮, শহীদ আফ্রিদি ০/২৮, আবু হায়দার রনি ০/২৬, খালেদ আহমেদ ০/৩৯, কাইরন পোলার্ড ০/৩৩)।
ঢাকা ডায়নামাইটস ইনিংস: ১৪৯/৯ (২০ ওভার)
(মেহেদী মারুফ ০, এভিন লিউইস ১৫, জো ডেনলি ০, সাকিব আল হাসান ২৬, কাইরন পোলার্ড ৫, জহুরুল ইসলাম ৫০, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১, শহীদ আফ্রিদি ৮, সুনিল নারিন ১৪, আবু হায়দার রনি ৯*, খালেদ আহমেদ ৮*; মাশরাফি বিন মুর্তজা ১/২৫, সোহাগ গাজী ২/৩২, রুবেল হোসেন ১/২৮, রবি বোপারা ১/২১, ইসুরু উদানা ২/২৫, নাজমুল ইসলাম ২/৮, ক্রিস গেইল ০/২)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ, প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট, মোস্ট এক্সাইটিং প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ, ব্যাটসম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার জিতেন ক্যারিবীয়ান ব্যাটিং দানব ক্রিইস গেইল।
(জাস্ট নিউজ/একে/২১৫০ঘ.)