সব পুরস্কার একাই পেলেন গেইল

সব পুরস্কার একাই পেলেন গেইল

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : পুরো টুর্নামেন্ট খেলতে পারেন নি। খেলেছিলেন মোটে ১১ ম্যাচ। এতেই উঠে গেলেন তুঙ্গে। প্রথম দিকে ব্যাট তেমন হেঁসে ওঠেনি। দর্শকদের ফিরতে হয়েছিল মন খারাপ করে। শেষ পর্যন্ত ঘুমন্ত দৈত্যের ঘুম ভাঙে। এতে ছারখার হয়ে যায় সবকিছু। একদিনেই বিশ্বরেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দেন। তছনছ করে দেন বিপক্ষ দলের বোলারদের সকল চেষ্টা। কোন কিছুই আটকাতে পারেনি তাকে। এতে পুরো সফল ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল।

ক্রিস গেইল মানেই ছয়-চারের ফুল ঝুড়ি ছুটবে মাঠে। সারা পৃথিবী জুড়ে এই দানবীয় ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি ফেরি করে বেড়ান। গেইল উইকেটে থাকা মানেই দর্শকদের মধ্যে বাড়তি রোমাঞ্চ। কারণ গেইল মানেই টি-টোয়েন্টির খোরাক।

ক্রিকেট বিশ্বে তাকে টি-টোয়েন্টি দানব বলা হয়। তা প্রথমে অনুধাবন করে খুলনা টাইটানস ও শেষে তা হাঁড়েহাঁড়ে টের পায় ঢাকা ডায়নামাইটস। ফাইনালে পুরো মিরপুর হয়ে উঠেছিল গেইলময়। শুধু যে রংপুরের সাপোর্টাররা তার ভক্ত তা নয়। ঢাকার সমর্থকরাও এদিন গেইল তাণ্ডব উপভোগ করেছিলেন মন ভরে। গেইল তাণ্ডবের দিনে যে কোনো দল উড়ে যায়। শুধু উড়ে যায় বললে কম বলা হয় খড়কুটোর মতো উড়ে যায়। এর ব্যতিক্রম হলো না এবারও। গেইল তাণ্ডবে আগেই ব্যাকফুটে ছিল ঢাকা। সেখান থেকে আর উঠতে পারেনি তারা। ক্যাপ্টেন কুল মাশরাফির বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কোচিত পারফরমেন্সে পঞ্চম আসরের শিরোপা ঘরে তুললো রংপুর রাইডার্স।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই ফেরিওয়ালা আজ নিজের রেকর্ড ভেঙে নিজেই নতুন রেকর্ড গড়েন। আজকের ম্যাচের আগ পর্যন্ত যে কোনো টুর্নামেন্টে এক ম্যাচে তার সর্বোচ্চ ছয় ছিল ১৭টি। যেটা তিনি আইপিএলে করেছিলেন। ১৭টি ছয়ের সেই রেকর্ড ভেঙে তিনি এক ইনিংসে ১৮টি ছয় মারেন আজ।

আজ হয়তো তিনি নিজেও জানতেন তার সামনে রয়েছে রেকর্ডের হাতছানি। তাই হয়তো সাকিবের করা ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে বল বাউন্ডারির কাছে গেলেও কোনো সিঙ্গেল তিনি নেননি। উল্টো শেষ বলে সাকিবকে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার মাইলফলক গড়েন এই ক্যারিবিয় ব্যাটিং দানব।

গেইল শুধু ছয়েরই রেকর্ড করেননি, করেছেন এই আসরের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগতও। ৬৯ বল খেলে তিনি করেন ১৪৬ রান। ১৮টি ওভারবাউন্ডারি ছাড়াও ইনিংসটিতে ছিল ৫টি বাউন্ডারি। আজকের সেঞ্চুরি নিয়ে বিপিএলে ক্রিস গেইলের মোট সেঞ্চুরি হল পাঁচটি। টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২০তম সেঞ্চুরি। আর পাঁচ আসর খেলে তার ছয়ের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৮টি।

বিপিএল আসরে প্রথম বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে হাজারি রানের ক্লাব তৈরি করেন সমুদ্রপাড়ের দৈত্য। এক বল পর সেই ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে পার্টিতে যোগ দেন ব্রেন্ডন ম্যাককালামও।

অনবদ্য সেঞ্চুরির সুবাদে উপহার হিসেবে তিনি প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ, প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট, মোস্ট এক্সাইটিং প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ, ব্যাটসম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারে ভূষিত হন। নগদ হিসেবে ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও একটি মোটরবাইক।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২৪৭ঘ.)