বিদ্যালয়ে না গিয়ে বেতন গ্রহণ: এমপি রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী ঝুমুর বরখাস্ত

বিদ্যালয়ে না গিয়ে বেতন গ্রহণ: এমপি রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী ঝুমুর বরখাস্ত

সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা-মধ্যনগর) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এর দ্বিতীয় স্ত্রী সেই শিক্ষিকা তানভী ঝুমুরকে অবশেষে বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তানভী ঝুমুর। কিন্তু বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকেও বেতন ঠিকই তুলে নিচ্ছিলেন এই শিক্ষিকা।

এমন অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফরের মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

শুক্রবার বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা মু. জিল্লুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সহকারী শিক্ষক তানভী ঝুমুকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আগে তানভী ঝুমুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জরুরিপত্র প্রেরণ করা হয়।

ঝুমুর তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের তরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিক হিসেবে নিয়োগ পান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে এমপি রতনের প্রভাবে ও তদবির করিয়ে তিনি ডেপুটেশনে আসেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে মাত্র একদিনের ছুটি নিয়েছিলেন তানভী ঝুমুর। অথচ এরপর থেকে গত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসেননি এই শিক্ষিকা।

অনুপস্থিত থেকেও কীভাবে নিয়মিত বেতন নিয়ে যাচ্ছেন এ শিক্ষিকা সে বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েক সদস্য জানিয়েছেন, এমপির স্ত্রী হওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মুখ খুলতে নারাজ। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন এমপি রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী তানভী ঝুমুর।

তানভি ঝুমুর এখন কোথায় এমন প্রশ্নের উওর জানা নেই জেলা, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্তাদের তেমনি জানেন না সদর উপজেলার তেঘরিয়া ও তাহিরপুরের তরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও।

বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, অতীতের ন্যায় বর্তমানেও সুনামগঞ্জে থাকছেন না তানভী ঝুমুর। কিছুদিন আগেও ঢাকায় ন্যাম ভবনে স্বামী এমপি রতনের ফ্ল্যাটে থাকলেও এখন সেখানেও নেই ঝুমুর।

ঠিক কতদিন ধরে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন তানভী ঝুমুর, প্রশ্নে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ে এসেছি ছয় মাস হলো। এসে উনাকে পাইনি। তবে উপস্থিতির খাতা দেখে জানতে পারলাম, তানভী ঝুমুর গত ৭ জানুয়ারি একদিনের ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেননি।