কঠোর নিরাপত্তায় দাফন

বাবা মায়ের পাশে শেষ ঠিকানায় মানবতাবাদী চিকিৎসক মঈন উদ্দীন

বাবা মায়ের পাশে শেষ ঠিকানায় মানবতাবাদী চিকিৎসক মঈন উদ্দীন

গ্রামের বাড়িতে বাবা মার কবরের পাশেই শায়িত হলেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সিলেটের মানবতাবাদী চিকিৎসক মোঃ মঈন উদ্দীন (৪৭)। বুধবার রাত ৮ টা ১০ মিনিটে জানাযা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি অনুসরণ করে দাফন করা হয় মহান এই চিকিৎসককে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়িতে পৌছে ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দীনের মরদেহ। মৃত্যুবরণকারী ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দীনের স্বজন জিয়াউল ইসলাম জানান, একটি সরকারি এ্যাম্বুলেন্স করে মরদেহ সুনামগঞ্জের ছাতকের নিজ বাড়িতে পৌঁছে। আছর থেকেই উপজেলা প্রশাসনের লোকজন বাড়িতে অবস্থান নেন। ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দীনের কিছু সহকর্মী পিপিই পড়ে বাড়িতে ছুটে যান।

কঠোর নিরাপত্তার সাথে কবরস্থানে পাশে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। একটু দূর থেকে বাড়িতে উপস্থিত ১০/১৫ জন স্বজন জানাযায় অংশ নেন। এ ছাড়া মরহুম মোঃ মঈন উদ্দীনের ৬ জন স্বজনকে পিপিই পড়িয়ে দাফন কার্যক্রমে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। তবে শর্ত দেয়া হয় তাদের ১৪ দিনের কোয়ারাইন্টাইনে থাকতে হবে।

বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় দাফন সম্পন্ন হয়। বুধবার (১৫ এপ্রিল) ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দীন। ডা. মঈন উদ্দীনের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নাদামপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। দুই শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে রেখে চিরবিদায় নিলেন তিনি। ডা. মঈনের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। সিলেটের হাউজিং এস্টেট এলাকায় তাদের বাসা।

গত ৫ এপ্রিল সিলেটে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) প্রথম আক্রান্ত রোগী হিসেবে এই চিকিৎসককে সনাক্ত করা হয়। ৭ এপ্রিল রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বাসা থেকে সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে নেয়া হয়। প্রথমে হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হলেও পরে সাড়ে ১১টার দিকে কেবিনে নিয়ে আসা হয়। অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে তার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়। পরদিন ৮ এপ্রিল বিকেল সাড়ে পাঁচটায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয় তাকে। সেখানেই ৭দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বুধবার ভোরে ডাঃ মোঃ মঈন উদ্দীন ইন্তেকাল করেন।