নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে পড়েছে দেশের ৯ ব্যাংক

নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে পড়েছে দেশের ৯ ব্যাংক

দেশের ব্যাংক খাতের ঋণের মান দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। ফলে এসব ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার চাহিদাও বাড়ছে। অন্যদিকে ঋণসংক্রান্ত অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলোর আয়ও কমে যাচ্ছে। ফলে তারা চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ রকম সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে তাদের পরিচালন মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ৯টি ব্যাংক ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলোকে ঋণের ওপর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সাধারণ নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হয়। এ ছাড়া খেলাপি ঋণের মান অনুযায়ী ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতিও রাখতে হয়। গত সেপ্টেম্বর শেষে ২৮ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকার ঘাটতিতে পড়েছে ৯টি ব্যাংক। জুন শেষে এসব ব্যাংকের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা অর্থাৎ এসব ব্যাংকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ঘাটতিতে রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ব্যাংকটি আলোচনায় রয়েছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। খেলাপিসহ অন্যান্য ঋণের বিপরীতে ব্যাংকটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের প্রয়োজন ছিল ১৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। কিন্তু ব্যাংকটি মাত্র ১ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তাদের সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা।

সঞ্চিতির ঘাটতিতে এরপরই রয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। এই ব্যাংকে সঞ্চিতির ঘাটতি হচ্ছে ৪ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। সঞ্চিতির ঘাটতিতে তৃতীয় স্থানে আছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন আরেক ব্যাংক অগ্রণী। গত সেপ্টেম্বর শেষে এই ব্যাংকে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ ছিল ১৬ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা।

এ ছাড়া গত সেপ্টেম্বর শেষে রূপালী ব্যাংকে ৪ হাজার ১৯৮ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ৫৪২ কোটি, ঢাকা ব্যাংকে ৩৯৯ কোটি, এনসিসি ব্যাংকে ৩৩৫ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ২৩৪ কোটি এবং মধুমতি ব্যাংকে ৯০ লাখ টাকার সঞ্চিতি ঘাটতি দেখা গেছে।