ভূরাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে: এফবিসিসিআই

ভূরাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে: এফবিসিসিআই

বর্তমান বিশ্ব ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ইতিমধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করেন শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেছেন, এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।

শনিবার রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন মাহবুবুল আলম। এফবিসিসিআইয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার’ এই মূলমন্ত্র মেনে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা, ভেদাভেদ ভুলে দেশের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মাহবুবুল আলম বলেন, ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির প্রাণ। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠুভাবে নিজ নিজ ব্যবসা পরিচালনা করতে চান। দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ খুবই জরুরি।’

দেশের ব্যবসা–বাণিজ্য এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ‘অসহিষ্ণু কর্মকাণ্ড’ থেকে বিরত থাকার জন্যও আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

মাহবুবুল আলম বলেন, ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উত্তরণ–পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাণিজ্য পরিবেশ ও নীতিমালা আধুনিকায়ন করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যু যেমন আন্তসীমান্ত বাণিজ্য ও সংযুক্তি, বিনিয়োগ, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেসরকারি খাতের সুপারিশ প্রণয়ন, শুল্ক ও করব্যবস্থা, অবকাঠামো, সাপ্লাই চেইন ও লজিস্টিক সাপোর্ট, জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, টেকনিক্যাল এবং ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষা— এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বেসরকারি খাতের অবস্থান এবং সুপারিশমালা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরা জরুরি।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের গ্রহণ করা বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি। এ সময় পুরান ঢাকায় নতুন শাখা অফিস খোলা ও উত্তরায় একটি ভোকেশনাল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা, গুলশানে এফবিসিসিআইয়ের সম্প্রসারিত অফিস চালু, এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন, পুরুষ জামানতকারী ছাড়াই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা কিস্তি প্রাপ্তি, আয়কর জমা দেওয়ার সময়সীমা দুই মাস বাড়ানোসহ নীতি অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে দেশের বেসরকারি খাতের সুরক্ষায় বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন মাহবুবুল আলম।

গত বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন, আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং নতুন একটি প্রতিষ্ঠানকে নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, শমী কায়সার, রাশেদুল হোসেন চৌধুরী, মো. মুনির হোসেন, পরিচালকবৃন্দ এবং এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।