চলে গেলো একটি ভিন্ন ২১ আগস্ট

চলে গেলো একটি ভিন্ন ২১ আগস্ট

সামীরা তানজিন চৌধুরী

এই দিন যারা প্রাণ দিয়েছিলো তারা এবং একই সাথে যাদের ওপর এই দিনে ঘটে যাওয়া নির্মম ঘটনার মিথ্যা দায় চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অপরাজনীতি করে নৃশংস অবিচারের মুখে ছুড়ে ফেলা হয়, তাদের সবাই সমানভাবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের স্বহস্তে চড়ানো ২১ আগস্টের বলি।

বহু বছর পর গতকাল কোনো পত্রিকায় দেখা গেলানো 'হত্যাকারী' আখ্যা দিয়ে ছবি ছাপিয়ে ভৎসনা ছুড়ে দেয়ার সেই নোংরা আস্ফালন। 

দীর্ঘ এক দশকের বেশীদিন ধরে নিয়ম করে এই দিন টক-শো আর মিডিয়াগুলোতে এক গাদা মিথ্যের ফুলঝুরি ছোটানো হত।  চলতাে মিথ্যে উদযাপনের জাকজমকপূর্ণ মহােৎসব।

দীর্ঘ এক দশকের বেশীদিন ধরে নির্দোষ একজন বিশাল হৃদয়ের মমতাময় দেশপ্রেমিককে মিথ্যা দোষারোপ করে যা ইচ্ছে তাই ভাষায় একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে তার নিষ্পাপ চরিত্রে কালিমা লেপনের মচ্ছব বসতো। যে সবের বিরুদ্ধে টু শব্দটি করার জো ছিলােনা, এমন কি তার জীবন, যৌবন  দিয়ে গড়ে তোলা ভালােবাসার দলও সাহসপায়নি উচ্চবাচ্য করার, কোনো শক্ত প্রতিবাদ তো দূর কি বাত! 

তার বিরুদ্ধে কুপ্রচারণা সবই স্বৈরাচারের দোসর মিডিয়ার সৃষ্টি। যারা এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল ছিলেন তাদের কাউকে যদিও এখন খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা,  কিন্তু তাদের পঙ্কিলতার গহ্বর থেকে তুলে আনা দোয়াত ভর্তি কালির চিহ্ণ কিন্তু রয়ে গেছে।

দীর্ঘ এক দশকের বেশীদিন ধরে ক্রমাগত অপপ্রচার আর চরিত্রহনন চালিয়ে এক বিশাল ব্যক্তিত্বের মহিরুহকে তার আত্মগোপনের একাকীত্বময় জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলে, তার কোমল হৃদয় আঘাতের পর আঘাতে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে ধীরে ধীরে ঠেলে দেয়া হলো মৃত্যুর কোলে।

তিনি আজ নেই, কিন্তু আমরা মনে রেখেছি।

লেখিকা 

সামীরা তানজিন চৌধুরী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর মেয়ে।