সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐক্যফ্রন্টের জনসভা

ঢাকার প্রবেশ পথে যানবাহনে পুলিশের কড়া তল্লাশি, বন্ধ ট্রেন চলাচল

ঢাকার প্রবেশ পথে যানবাহনে পুলিশের কড়া তল্লাশি, বন্ধ ট্রেন চলাচল

ঢাকা, ৬ নভেম্বর (জাস্ট নিউজ) : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভাকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রতিটি প্রবেশ পথ বিশেষ করে গাবতলী, সায়েদাবাদ, উত্তরা ও নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চলাচলও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। একটি মাত্র ইঞ্জিন চালু থাকলেও সব বগি আলাদা করে রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে একটি একটি করে সব ধরনের যানবাহন থামিয়ে এ তল্লাশি অভিযান পরিচালনা চালাচ্ছে পুলিশ। এ অভিযান পরিচালনা করছে ডিএমপির কদমতলী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সাজু মিয়ার নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য।

অপরদিকে ডিএমপির পুলিশের ধীরগতির তল্লাশি অভিযানের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়েকর সাইনবোর্ড থেকে শিমরাইল মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়েকর সাইনবোর্ড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রবেশ পথে ডিএমপির কদমতলী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সাজু মিয়ার নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য একটি একটি করে থামিয়ে এ তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করছেন।

বাস মিনিবাস ছাড়াও তল্লাশি থেকে বাদ পড়ছে না রিকশা, সিএনজি, লেগুনা, প্রাইভেটকারও। ডিএমপির পুলিশের ধীরগতির তল্লাশি অভিযানের ফলে মহাসড়কে যানজটের কবলে পড়ে আছে শত শত যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পরিবহন যাত্রীদের।

মহাসড়কে যানজটের বিষয়ে কথা হলে নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের সাইনবোর্ড এলাকার দায়িত্বরত ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. জিয়াউল করিম বলেন, ডিএমপি পুলিশের তল্লাশি অভিযানের ফলে এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভাকে কেন্দ্র করে সভাস্থলসহ পুরো রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শাহবাগ ও রমনা এলাকাসহ পুরো রাজধানীতে পুলিশের বাড়তি তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। উদ্যান এলাকায় থানা পুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। শাহবাগ ও টিএসসি মোড়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের সাজোয়া যান, জলকামান, প্রিজনভ্যান।

সরেজমিন শাহবাগ, মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, দোয়েল চত্বর, টিএসসি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশ পথে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

জনসভার কারণে রাজধানীর শাহবাগ মোড়, মৎস্যভবন, দোয়েল চত্বর এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে সবধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

ডিএমপি’র রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, জনসভায় জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে পুরো ঢাকা শহরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ডিএমপি। যেকোন ধরনের অপতৎপরতা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। কেউ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর আগে সোমবার রাতে ডিএমপি’র মিডিয়ার অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, ডিএমপি থেকে নিরাপত্তা, মাইকের নির্দিষ্ট ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জনসভা শেষ করাসহ বেশ ক’টি শর্তে ঐক্যফ্রন্টকে জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের জনসভা সফল করতে মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া মঞ্চ নির্মাণ, মাইক স্থাপনসহ সার্বিক প্রস্তুতি দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা, গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ এ জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেবেন। প্রথমবারের মতো ঐক্যফ্রন্টের মঞ্চে উঠবেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৫৫০ঘ.)