তীব্র শীত উপেক্ষা করে আমরণ অনশনে মাদরাসা শিক্ষকেরা

তীব্র শীত উপেক্ষা করে আমরণ অনশনে মাদরাসা শিক্ষকেরা

ঢাকা, ৯ জানুয়ারি (জাস্ট নিউজ) : দাবি আদায়ের জন্য তীব্র শীত উপেক্ষা করে রাজপথে রাত পার করছেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকেরা। ১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী চলা অবস্থায় মঙ্গলবার আমরণ অনশন শুরু করেন তারা। শীতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে।

আমরণ অনশনের প্রথম দিনই মঙ্গলবার ২৩ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের বেশিরভাগ ডায়রিয়া এবং জ্বরে আক্রান্ত হন। তাদের সবাইকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানান, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মাদরাসা শিক্ষক আবু সাঈদ। তারা আগে থেকেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী পালন করে আসছিলেন।

মাদরাসা বোর্ড থেকে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদারাসা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করছেন শিক্ষকেরা। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে সারা দেশ থেকে এতে যোগ দিয়েছেন কয়েক হাজার শিক্ষক। যোগ দিয়েছেন অনেক নারী শিক্ষকও।

দাবি আদায়ের ব্যাপারে অনড় অবস্থান ব্যক্ত করে শিক্ষকরা বলেন, সরকার ২০১৩ সালে ২৬ হাজার প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করে এক ঘোষণায়। অল্পসংখ্যক বাদে এদের প্রায় সবই ছিল রেজিস্ট্রার্ড প্রাইমারি স্কুল। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে রেজিস্টার্ড প্রাইমারি স্কুল ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা ভাতার আওতায় আনার ঘোষণা দেয়ার পর সব রেজিস্ট্রার্ড প্রাইমারি স্কুল জাতীয়করণ করা হলো, কিন্তু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণ তো দূরের কথা ভাতার ব্যবস্থাও করা হলো না। ১৯৯৪ সালে দেড় হাজারের কিছু বেশি মাদরসায় ভাতা দেয়ার পর বন্ধ হয়ে গেল। এটা আমাদের প্রতি বৈষম্য। অথচ আমরাও সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের মত একই দায়িত্ব পালন করি। সরকার আমাদের বিনামূল্যের বই দেয়, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, বিস্কুট দেয়। কিন্তু আমাদের কোনো বেতন নেই। বছরের পর বছর ধরে শিক্ষকরা বেতনহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আমরা এবার এর অবসান চাই। দাবি আদায় না করে এবার আর ঘরে ফিরব না। প্রাইমারি স্কুলের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসাও জাতীয়করণের ঘোষণা চাই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।

এদিকে ১ জানুয়ারি লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরুর পর থেকে ক্রমে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা বাড়ছে কর্মসূচীতে। মঙ্গলবার তিন হাজারের মতো শিক্ষক অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেন বলে হিসেব করেন শিক্ষকরা।

১৯৮৪ সালে মাদরাসা বোর্ড ১৮ হাজার ১৯৪টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা রেজিস্ট্রেশন দেয়। বেতন ভাতার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক মাদরাসা। গত বছর পর্যন্ত মাদরাসা বোর্ডের তথ্য অনুসারে ছয় হাজার ৯৯৮টি মাদরাসার তালিকায় রয়েছে। তবে বোর্ডের তালিকার বাইরেও অনেক মাদরাসা চলমান রয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। সব মাদরাসা জাতীয়করণ চান তারা।

(জাস্ট নিউজ/একে/১৮৩০ঘ.)