'গণতন্ত্র ফার্মআপ করতে হলে নির্বাচন ঠিক করতে হবে'

'গণতন্ত্র ফার্মআপ করতে হলে নির্বাচন ঠিক করতে হবে'

ঢাকা, ১৭ জুলাই (জাস্ট নিউজ) : ২০২১ সালে বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো গণতন্ত্র। আর সেটি সুদৃঢ় করতে হলে আগে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঠিক করতে হবে। এমন মন্তব্যই করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।

সোমবার দিবাগত রাতে চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘তৃতীয় মাত্রা’র ১৬ বছরে পদার্পনে বিশেষ অনুষ্ঠানে এসে ২০২১ সালে পঞ্চাশ বছরে পা রাখতে যাওয়া বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র। গণতন্ত্র মানেই নির্বাচন না।

তবে আমাদেরকে গণতন্ত্র ফার্মআপ করতে হলে নির্বাচনকে ঠিক করতে হবে। সংবিধান বলছে এদেশের মালিক এদেশের জনগণ। জনগণ শাসন করবে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি দিয়ে। তৃতীয় মাত্রার বিশেষ এ পর্বে আরো উপস্থিত ছিলেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এম আতাউর রহমান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জিল্লুর রহমান।

বর্তমান সময়ের টকশোগুলো কিভাবে প্রভাব ফেলছে এমন প্রশ্নে অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যারা শাসক তারা লাভবান হচ্ছেন, যারা শুনছেন তারাও লাভবান হচ্ছেন। এক ইস্যুর উপরে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা হচ্ছে। সে দিক থেকে বলবো, আপনার অনুষ্ঠান একটা বড় প্রভাব ফেলছে। আপনারা অনুকরণীয় হয়েছেন। আপনাদের দেখে প্রতিটি চ্যানেল টকশো ইন্ট্রোডিউস করেছে। তার মানে এই নয় যে আপনাদের সমমানের। তৃতীয়মাত্রা আরো কিভাবে এগিয়ে যেতে পারবে তা জানতে পরামর্শ চাইলে এই আইনজীবী বলেন, এমনও টকশো তে দেখা গেছে অতিথির বক্তব্যের সময় উপস্থাপকের হস্তক্ষেপের কারণে তিনি উঠে চলে গেছেন। এটা তৃতীয় মাত্রায় ঘটেনি। এমনটা যেন না ঘটে। আমাদের দেশে একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে গর্ভমেন্টের বিরুদ্ধে এসে কথা বলা। জাস্টিফায়েড, আনজাস্টিফায়েড, বেইজলেস কথা বলা। এগুলো আমি দেখেছি আপনি প্রপার টাইমে এসে থামান। এগুলো এনকারেজ করা উচিত না বলে আমি মনে করি। তাই বলছি যা-ই করবেন সাবধানে করবেন।

এদিকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানী এম আতাউর রহমান বলেন, প্রভাব সেভাবে বোঝানো যাবে না। তবে একটা শিক্ষিত সম্প্রদায় তৈরি করেছেন সেটা একটা বড় অবদান। তৃতীয় মাত্রায় আসি তখন খুব সহজে ওপেন হতে পারি। যা অন্য কোথাও গেলে পারি না। তৃতীয় মাত্রার জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি আরো জানান, ডিজইনফরমেশন দিচ্ছে কিনা, সেটা যাচাই করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের দুই একজন উপকার পাচ্ছে না তা নয়। পাচ্ছে তো। এটাও তো একটা বড় প্রভাব। তবে এটা বলতেই হবে একটি অনুষ্ঠান ১৬ বছর ধরে চালিয়ে নেয়া অনেক বড় ব্যাপার। তৃতীয় মাত্রার জন্য পরামর্শ দিতে গিয়ে সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনুষ্ঠানে এসে অনেকে উত্তর না থাকলে পুরনো কথা তুলে আনেন। কাল কি হয়েছে সেটা সামনে আনার কোনো দরকার নেই। এই জায়গাটি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনুষ্ঠানের কিছু স্তর ঠিক করতে হবে। আপনি কার জন্য অনুষ্ঠানটি করছেন। আরেকটি ব্যাপার অনুষ্ঠানে ইয়ংগার জেনারেশনকে যোগ করা উচিৎ।

এদিকে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এ ধরণের টক শো সফল করতে হলে উপস্থাপকের পেশাদারী ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি খুব জরুরি একটি বিষয়। এত বছর ধরে আপনি সেটি ধরে রেখেছেন। প্রভাব ফেলার ব্যাপার নির্ভর করছে, তার সহায়ক পরিবেশ কতটুকু আছে সেটার ওপর। বাংলাদেশে অনেক টক শো হয়। কথাবার্তা এবং কোলাহল দুটোর মধ্যে এক ধরণের পার্থক্য রয়েছে বটে। কথাবার্তা হতে পারে, কিন্তু সেটা কোলাহলের পর্যায়ে চলে গেলে সেই টকশোর ভূমিকা আর তেমন থাকে না। বড় ধরণের প্রভাব আশা করা যায় না। আমরা যেটা চাই মুক্ত আলোচনার পরিসরটা অক্ষুন্ন রাখা। যতটুকু বুঝতে পারি, এই মুক্ত আলোচনার মধ্যে এক ধরণের বৈরী পরিবেশের মধ্যে আমরা আছি। সেই বৈরী পরিবেশে টিকে থাকাটাও জরুরি। যেটা তৃতীয় মাত্রা ধারাবাহিকভাবে টিকে থাকার কাজটা করছে। তৃতীমাত্রার জন্য হিসেবে তিনি বলেন, পরামর্শ সাহসের একটা ব্যাপার আছে। সেটা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনি বারবার দেখিয়েছেন। এটা ধরে রাখতে হবে। আরেকটা পরামর্শের কথা বলি, শুধু রাজনীতি দিয়ে চলবে না। বাংলাদেশে বিষয়ভিত্তিক অনেক কিছু রয়েছে। যেগুলো বুদ্ধির সাথে, সক্ষমতার সাথে আগানো প্রয়োজন।

(জাস্ট নিউজ/একে/২২০০ঘ.)