নুরের ওপর হামলায় ইন্ধনদাতা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের অর্থযোগানদাতা রাব্বানী!

নুরের ওপর হামলায় ইন্ধনদাতা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের অর্থযোগানদাতা রাব্বানী!

ডাকসু কক্ষে ঢুকে বাতি নিভিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর ও অন্যান্যদের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের হামলা ঘটনায় উত্তাল সারাদেশ। এ হামলা ঘটনায় চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কৃত ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানীর ইন্ধন রয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

হামলার দিন থেকেই ঢামেকে শয্যাশায়ী অবস্থায় এ হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক (ডাকসুর এজিএস) সাদ্দাম হোসেন জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছেন ভিপি নুর।

তবে এখন হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী নামও শোনা যাচ্ছে।

এদিকে ভিপি নুরের ওপর এ হামলাকে ছাত্র সমাজের জন্য কলঙ্ক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ এমপি।

তদন্তের সাপেক্ষে হামলার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে ওই হামলার ঘটনার ইন্ধনদাতা হিসেবে অভিযোগের তীর ঘুরে-ফিরে ওই তিনজনের দিকেই যাচ্ছে।

তবে এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও ইন্ধনদাতাদের ব্যাপারে এখনো কিছু বলা হচ্ছে না।

গণমাধ্যমের হাতে আসা একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বরে ডাকসু ভবনে ভিপির কক্ষে নুর ও অন্যান্য ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় তিনজন ইন্ধনদাতার নাম এসেছে। তারা হলেন- ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক (ডাকসুর এজিএস) সাদ্দাম হোসেন।

এই তিনজনের ইন্ধনেই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ডাকসু কার্যালয়ে গিয়ে হামলা চালায়।

কী কারণে এবার ভিপি নুরের ওপর এমন নৃশংস হামলা চালানো হলো সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়, ভিপি নুরের ওপর হামলাকারী মুক্তিযুদ্ধের মঞ্চের এই অংশের সঙ্গে ডাকসু জিএস গোলাম রাব্বানীর বেশ সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের বিভিন্ন সভা ও সেমিনারের অর্থযোগানদাতা। জানা গেছে, রাব্বানীকে ফের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে বহালের দাবিতে টানা আন্দোলন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সে সময় এই মঞ্চ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্যের পদত্যাগও দাবি করে।

এদিকে সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ভিপি নুরের সরকারবিরোধী বক্তব্য দেয়াসহ ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে কথা বলায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই ক্ষোভ থেকেই ভিপি নুরের ওপর এ হামলা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। এটি সম্পূর্ণ তাদের অভ্যন্তরীণ ও নিজস্ব গবেষণার জন্য। এসব নিয়ে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলার কিছু থাকে না।’

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘মারামারি করতে নয়; আমি আর আমাদের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এই ঘটনা থামানোর জন্য চেষ্টায় ডাকসু ভিপির রুমে গিয়েছি। চেষ্টা করেছি যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। কিন্তু এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ভিপি নুরই দায়ী।’

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ডাকসু জিএস গোলাম রাব্বানীসহ ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।