‘শুধু বুয়েটে নয়, প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নির্যাতন চলে’

‘শুধু বুয়েটে নয়, প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নির্যাতন চলে’

শুধু বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নয়, দেশের প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আবরার ফাহাদের মতো শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হয় বলে মনে করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বুয়েটের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ড বুয়েটের কপালে কালিমা রেখা এঁকেছে। এই ঘটনার পর জানতে পারলাম শুধু বুয়েটের নয়, বাংলাদেশের প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এ ধরনের নির্যাতন চলে। এটা আমাদের খুবই বিস্মিত করে।’

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বুয়েটের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দিনব্যাপী বুয়েট অ্যালামনাইয়ের ‘গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন-২০২০’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুজ্জামান বলেন, ‘দেশের সেরা এবং মেধাবী শিক্ষার্থীরাই বুয়েটসহ নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। তাদের মাঝে যদি এই অমানবিক মানসিকতা থাকে তাহলে এই মেধা নিয়ে কি করবো? আজকে এই প্রশ্ন আমাদের নিজেদের করতে হবে এবং এর জন্য পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, বুয়েট অ্যালামনাইয়ের মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দফতরের পরিচালক ও বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘বুয়েট প্রতিষ্ঠার ১৫৪ বছরে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সবচেয়ে মর্মান্তিক এবং মারাত্মক। সারাদেশ এবং সারাবিশ্বে এ ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আশা করছি এর সুষ্ঠু এবং কার্যকরী বিচার হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় বুয়েট অ্যালামনাই কর্মসূচি পালন করেছে। কর্মসূচিতে আমাদের দাবির মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করা। পুরো শিক্ষাব্যবস্থা থেকে দুরবস্থা দূর করতে হলে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থার খারাপ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।’

বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম নিহত আবরারের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করে বলেন, ‘আমি আমার বক্তব্যের প্রথমে আবরারের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সব ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে স্মরণ করছি। বুয়েট অ্যালামনাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এরকম সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য। আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। সনাতনী চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক চিন্তা নিয়ে বিশ্বের দরবারে দাঁড়াতে হবে। এ কাজে বুয়েট অ্যালামনাই এসোসিয়েশনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে।’

আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় বুয়েটের সাবেকদের মিলন মেলায়। এই আয়োজনে গত বছরের অক্টোবরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে স্মরণ করা হয়।