দুই সপ্তাহে ১৩ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারিয়েছে ডিএসই

দুই সপ্তাহে ১৩ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারিয়েছে ডিএসই

টানা দরপতনে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন হারিয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক কমেছে ৩৭৪ পয়েন্ট। সে সঙ্গে কমেছে আর্থিক ও শেয়ার লেনদেন।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশের ব্যাংক ও ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাতের দূরবস্থা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণের বিরুপ প্রভার পড়েছে পুঁজিবাজারে।এই সব কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। সে সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদ নয়-ছয় শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া। এছাড়াও পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের পর আরো কয়েকটি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দূরবস্থার খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এইসব কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, “পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু আশ্বাস দেওয়া হলেও তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না। বিশেষ করে, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার সংস্কারে এডিবি‘র ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে অর্থ সরবরাহ করার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কিন্তু এসব ঘোষণা কয়েকদিন দরপতন বন্ধ থাকলেও বাজারে কোনো স্থায়ী পরিবর্তন আসেনি।”

তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো দেশের আর্থিক খাতের দূরবস্থা। বিশেষ করে ব্যাংক ও ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দূরবস্থার কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকের সুদের হার ও আমানতের সুদ নয়-ছয় নির্ধারণ করে দেয়ায় পুঁজিবাজারে দরপতন হচ্ছে।’

ডিএসই সূত্র জানায়, ডিএসইতে লেনদেন হওয়া সর্বশেষ ১১ কার্যদিবসের মধ্যে ৯ দিনই পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। বিপরীতে মাত্র ২ দিন সূচক ছিল ঊর্ধমুখী। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। কিন্তু টানা দরপতনের কারণে গত ৫ মার্চ ডিএসইর বাজার মূলধন ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।এই সময়ে টানা দরপতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, ডিএসই প্রধান সূচক ওইদিন ছিল ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্ট। সর্বশেষে গত ৫ মার্চ ডিএসইর সূচক ৪ হাজার ৩৮৪ পয়েন্টে নেমে আসে।

এমজে/