রিজার্ভ আরও কমল

রিজার্ভ আরও কমল

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নেমেছে ২১ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার যা ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক এতদিন যে পদ্ধতিতে হিসাব করে আসছে সে অনুযায়ী রিজার্ভ নেমেছে ২৭ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গত সপ্তাহে যা ছিল ২৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন।

দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ ২৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর বাড়তে-বাড়তে ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। এরপর থেকে আবার ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত বছরের এ সময়ে রিজার্ভ ছিল ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আকুর দায় শোধের পর এখন এ পর্যায়ে নেমেছে।

আকু হলো- একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিস্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যে লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। এক সময় শ্রীলঙ্কা এ তালিকায় ছিল। তবে বৈদেশিক মুদ্রার খারাপ অবস্থার কারণে দেশটির দায় পরিশোধের মতো অর্থ ছিল না। যে কারণে গত বছর আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় দেশটি। অবশ্য বর্তমানে শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণের ১৫ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে দেশটি।

ডলার সঙ্কটের এ সময়ে রিজার্ভের অবস্থান ধরে রাখতে আমদানি খরচ কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার পর গত অর্থবছর আমদানি কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ। আবার রপ্তানিতে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং রেমিট্যান্সে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে বেসরকারি খাতে নতুন ঋণের তুলনায় পরিশোধের চাপ অনেক বেড়েছে। যে কারণে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের সঙ্কট কাটছে না। এর মধ্যে হুন্ডি বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমছে।

যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, খরচ হচ্ছে তার তুলনায় বেশি। বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় আড়াই বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে। গত অর্থবছর বিক্রি করে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি করা হয় ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।