বিশ্ববাজারে প্রতিটি ডিম ৫.৬১ টাকা, দেশে সাড়ে ১২ টাকা

বিশ্ববাজারে প্রতিটি ডিম ৫.৬১ টাকা, দেশে সাড়ে ১২ টাকা

বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের বর্তমান দামের সঙ্গে দেশের বাজারে একই পণ্যের দামে বড় রকমের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের তুলনায় বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্য অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা নথিতে দেখা গেছে। সামগ্রিকভাবে দামের পার্থক্য অনেক বেশি। বিশেষ করে দেশের বাজারে ডিমের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। যদিও বাংলাদেশে ডিম আমদানি হয় না।

গত বুধবার কৃষিপণ্যের মূল্য পর্যালোচনাসংক্রান্ত সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে উপস্থাপনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে এই চিত্র উঠে এসেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক মাসে পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ও ডিমের দাম কমেছে। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম প্রতি মেট্রিক টনে কমেছে ১২ শতাংশ, আদার দাম কমেছে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ, কাঁচা মরিচের দাম ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ডিমের দাম প্রতিটিতে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মধ্যে শুধু রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্যদিকে গত এক মাসে দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে কাঁচা মরিচ ও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপনায় দেখানো হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ২৬ দশমিক ৭০ টাকা (প্রতি ডলার ১০৯.৫০ টাকা হিসাবে)। ওই দিন রসুনের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৯৩ দশমিক ৫৯ টাকা, আদার দাম ছিল ১২৩ দশমিক ৫২ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১২০ দশমিক ১৮ টাকা। ডিমের দাম প্রতি পিস ছিল ৫ দশমিক ৬১ টাকা। উপস্থাপনায় অন্য পণ্যের দাম ডলারে উল্লেখ করা হলেও ডিমের দাম টাকায় দেওয়া হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপস্থাপনায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, দেশে চলতি বছর ডিমের চাহিদাতিরিক্ত সরবরাহের পরিমাণ ১৩৪ দশমিক ৫৮ কোটি পিস। উপস্থাপনার পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত সরবরাহ বিবেচনায় দেশে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রতিটি লাল ডিম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ দশমিক ৫০ টাকা এবং প্রতিটি সাদা ডিম পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও বলছে, দেশের পাইকারি বাজারে গত ২২ আগস্ট প্রতি কেজি আলুর বিক্রয়মূল্য ছিল ৩৩ দশমিক ৮৪ টাকা এবং ১১ সেপ্টেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২ টাকায়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ দিনে পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, যার সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যয়ের সম্পৃক্ততা নেই।

কৃষিপণ্যের মূল্য পর্যালোচনাসংক্রান্ত সভায় জানানো হয়েছে, দেশে এ বছর আলুর উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ১২ কোটি মেট্রিক টন, যা গত বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। তবে আলু মজুতের পরিমাণ কমেছে বলে তথ্য দেওয়া হয়েছে।