এবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা জোফ্রের

এবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা জোফ্রের

যুক্তরাষ্ট্রের যে নারী অভিযোগ করেছিলেন যে ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথের দ্বিতীয় ছেলে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সাথে যৌনকর্ম করার জন্য ১৭ বছর বয়সে তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল, তিনি নিপীড়নের অভিযোগে নিউইয়র্কে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ভার্জিনিয়া জোফ্রে দাবি করেছেন, লন্ডন ও নিউইয়র্কে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন তিনি। সাজাপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধেও যৌন নিপীড়নের একজন অভিযোগকারী ভার্জিনিয়া জোফ্রে।

তবে মার্কিন নারী জোফ্রের অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছেন ব্রিটেনের প্রিন্স অ্যান্ড্রু।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতন বিরোধী আইনের আওতায় ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন জোফ্রে। ওই আইনে নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের অধিকারের আওতা বাড়ানো হয়েছে। জোফ্রের অভিযোগের বিষয়ে ২০১৯ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রু মন্তব্য করেছিলেন, এরকম কিছু কখনো হয়নি।

বিবিসির নিউজনাইট অনুষ্ঠানেতিনি বলেছিলেন, এটা ঘটেনি। আমি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারি, এরকম কখনোই ঘটেনি। এই ভদ্র নারীর সাথে কখনোই পরিচয় হয়েছে বলে আমার মনে পড়ছে না।

পরবর্তীকালে একটি বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেছেন, জেফরি এপস্টেইনের সাথে অবিবেচনাসুলভ সম্পর্ক রাখার জন্য আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে অনুশোচনা করে যাচ্ছি। তার আত্মহত্যার ফলে অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে গেল। বিশেষ করে তার নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য, যারা এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের আমি গভীরভাবে সমবেদনা জানাই।

ওই বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু আরো বলেছেন, আমি শুধু আশা করতে পারি যে সময়ের সাথে সাথে তারা পুনরায় নতুন করে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই যথাযথ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তাদের তদন্তে সহায়তা করতে আগ্রহী আমি।

এই খবরের বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাকিংহ্যাম প্যালেস ও ডিউক অব ইয়র্কের প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করেছে বিবিসি। জোফ্রের লস্যুটে (লিখিত অভিযোগে) বলা হয়েছে, ওই সময় লন্ডনে এপস্টেইনের একজন সহযোগী গিলেইন ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে তখন ভার্জিনিয়া রবার্টস নামে পরিচিত জোফ্রেকে যৌন নিপীড়ন করেছেন ডিউক। পরবর্তীকালে ম্যানহাটনে এপস্টেইনের বাড়িতে ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডের লিটল সেন্ট জেমসেও নিপীড়ন করেন।

এপস্টেইনের সাথে মিলে চারজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে নিপীড়ন করার ফেডারেল অভিযোগের ব্যাপারে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ম্যাক্সওয়েল। নভেম্বরে তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতনবিরোধী আইনকে গত বছর গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো যুগান্তকারী বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এর ফলে যারা অপ্রাপ্ত বয়সে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, যেসব অপরাধ জানা যায়নি বা বিচার হয়নি, সেগুলোর বিচার প্রাপ্তির পথ তৈরি হয়েছে।

২০১৯ সালে আইনটি জারি করা হয়। এই আইন অনুযায়ী, সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে এর আগে যেসব অভিযোগ আনা যায়নি, সেসব অভিযোগ দায়ের করার জন্য এক বছর সময় দেয়া হয়। পরবর্তীকালে ওই সময়সীমা এই বছরের ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।সূত্র : বিবিসি

এমজে/