‘মামলা শতভাগ মিথ্যা। সাংবাদিক, আপনারা কী করছেন?’

‘মামলা শতভাগ মিথ্যা। সাংবাদিক, আপনারা কী করছেন?’

আদালতে আজ মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানির সময় কেঁদে ফেলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। পরে আদালত থেকে বের হয়ে এসে তিনি চিৎকার করে বিভিন্ন কথার মধ্যে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

আজ পরীমনির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আর প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

আজ সিএমএম আদালতে পরীমনির আসার সংবাদে ব্যাপক ভিড় হয়। দুপুর ১২টার দিকে আদালতে আসেন পরীমনির বৃদ্ধ নানা শামসুল হক। আদালতে শুনানির সময় অবশ্য তিনি অন্য কক্ষে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে পরীমনির দেখা হয়নি।

আজ আদালতে শুনানির সময় পরীমনি কাঁদতে থাকেন। মিনিট পাঁচেক ধরে তিনি কাঁদতে থাকেন। রিমান্ড শুনানি চলাকালে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান দাবি করেন, পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর যে পোশাক পরে ছিলেন, আজও সেই পোশাক পরে আছেন। তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার বা কথা বলার কোনো সুযোগ পাননি। এটি একজন নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।

৪ আগস্ট পরীমনিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়।

আজ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর আদালত থেকে বের হওয়ার পর পরীমনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা শতভাগ মিথ্যা। সাংবাদিক, আপনারা কী করছেন?’

পরীমনির বিরুদ্ধে মামলার বাদী হলেন র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান। এ মামলায় মজিবর অভিযোগ করেন, ৪ আগস্ট তিনিসহ র‍্যাব-১-এর সদস্যরা গুলশান-১ গোলচত্বরে অবস্থান করছিলেন। বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, বনানীর একটি বাসায় পরীমনি সহযোগী আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে নিজের বাসায় মজুত রেখেছেন। তাঁরা বাসায় অবস্থান করছেন। পরে বাড়ির পঞ্চম তলায় অভিযান চালিয়ে পরীমনির বাসা থেকে নারী র‍্যাব সদস্যদের সহায়তায় তাঁকে আটক করা হয়। বাসার একটি কক্ষের কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এ ছাড়া একটি সাদা জিপ প্যাকে রাখা চার গ্রাম আইস বা ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা হয়। আরও জব্দ করা হয় এক ব্লট এলএসডি মাদক। পরীমনির বাসা থেকে জব্দ বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকের মোট দাম দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার টাকা।

মামলায় বলা হয়, পরীমনি এসব মাদকদ্রব্য কবির নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করে বাসায় রাখতেন। মামলায় কবিরের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা উল্লেখ নেই। একই মামলায় আবার র‍্যাব দাবি করেছে, চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের কাছ থেকে মাদক সংগ্রহ করতেন। তবে পরীমনি ও আশরাফুল ইসলামের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেছেন, র‍্যাব বাসায় মাদক পাওয়ার অভিযোগে যে মামলা করেছে, তা সঠিক নয়।

আদালত মাদকের উৎসসহ নানা বিষয় উদ্‌ঘাটনের জন্য পরীমনিকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। রিমান্ড শেষে আবার পরীমনিকে আদালতে নেওয়া হয়। বনানী থানায় করা মাদক মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। ইতিমধ্যে সিআইডির একটি দল পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের যে ধারায় পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারলে তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।