সিসির সাথে একটেবিলে ভোজনে বসলেননা এরদোগান, বসলেন হাসিনা

সিসির সাথে একটেবিলে ভোজনে বসলেননা এরদোগান, বসলেন হাসিনা

মিসরের বিতর্কিত স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি'র সঙ্গে এক টেবিলে ভোজনে বসেননি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। ঘটনাটি দৃষ্টি কেড়েছে বিশ্বের। ইতিমধ্যে নেটি দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট ভোজনে না বসলেও বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখা গেছে সেখানে। দুই জনের পাশাপাশি চেয়ার। তিনি বসেছেন সিসির বাম দিকে। মিসরের প্রেসিডেন্টের দিকে কিছুটা ঝুঁকে কুশল-বিনিময় করছেন হাসিনা।

পুরো বিশ্বে কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, কি প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়া-সর্বত্রই ঘটনাটি এখন আলোচনার কেন্দ্র।সিসির সঙ্গে না বসার ছবিটি নিয়েই কথা হচ্ছে। স্বৈরাচার, সেনাশাসকের সঙ্গে না বসায়, তাকে বয়কট করায় বাহবা পাচ্ছেন এরদোগান।

সিসিই মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের নর্থ ডেলিগেটস লাউঞ্জে মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজের সময় এ ঘটনা ঘটে। খবর তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ’র।

এরদোগানের জন্য নির্ধারিত টেবিলে মিসরিয় প্রেসিডেন্ট সিসিও বসবেন একথা জানার পর ওই টেবিলে বসে মধ্যাহ্নভোজ সাড়তে অস্বীকৃতি জানান এরদোগান। পরে তিনি পাশেই অন্য টেবিলে মধ্যাহ্নভোজ সম্পন্ন করেন। আর সেই টেবিলে ফাঁকা পড়ে থাকে নির্ধারিত চেয়ারটি।

সিএনএন টার্ককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান বলেন, "এখানে মিসরের প্রেসিডেন্টের পক্ষের একজন মধ্যস্থতাকারী প্রায়ই আমার কাছে এসে সিসির সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। আমি তাকে স্পষ্ট বলে দিয়েছি, তার (সিসি) মত রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আমি কখনোই কথা বলব না।"

মুরসির আদালতে মৃত্যুর পর বিষয়টি তদন্ত করতে জাতিসংঘকে আহবান জানিয়েছিলেন এরদোগান। তিনি এঘটনার জন্য সিসিকেই দায়ী মনে করেন।

মিসরে সিসির নেতৃত্বে সামরিক হস্তক্ষেপের পর থেকেই তুরস্কের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের অবনমন ঘটে।

এরদোগান বলেন, "আদালতে ২০ মিনিটেরও বেশী সময় যন্ত্রণা ভুগ করে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মারা যাবার পরও তা নিয়ে নূন্যতম কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি মিসরীয় কর্তৃপক্ষকে। এমনকি লাশটা পর্যন্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। নিজ শহরে দাফনের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট মুরসির শেষ ইচ্ছাটুকুও পূরণ করা হয়নি।"

সিসি কোনোভাবে গণতান্ত্রিক নয়, সে একটা বিশ্বাসঘাতক বলে মন্তব্য করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, "সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকান্ডে তুরস্কের সঠিক অবস্থান খুঁজে পেয়েছে জাতিসংঘ। আমি আশা করবো সংস্থাটি মুরসির রহস্যজনকভাবে মারা যাবার বিষয়টিও শক্তভাবে দেখবে।"

এরদোগান বলেন, "তুরস্ক যেভাবে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকে ভুলে যায়নি তেমনিভাবে মুরসি হত্যার বিষয়টিতেও ছাড় দেবেনা।"

আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যেই মুরসির মৃত্যুর বিষয়টিতে ন্যায় নিশ্চিত করতে তুরস্ক সবরকমের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে জানান এরদোগান।

গত ফেব্রুয়ারিতে এক সাক্ষাতকারে এরদোগান বলেন, সিসির মত লোকের সঙ্গে আমি কখনই কথা বলব না।

এসজে/