মন্দিরের প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় গাঁজা!

মন্দিরের প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় গাঁজা! তিনথিনিতে কৃষ্ণা নদীর ধারে মৌনীশ্বর মন্দির। ছবি : টুইটার থেকে নেওয়া

গাঁজা নিয়ে বিতর্ক যেন ছাড়ছেই না ভারতে। দেশটির পুলিশ গাঁজা ও মাদক চক্র ভাঙতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বলিউডের বিভিন্ন তারকাদের গাঁজা সেবনের বিষয়টি সামনে আসে। এবার মন্দিরের প্রসাব হিসাবে গাঁজা বিতরণের খবর প্রকাশ পেল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার’র প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির উত্তর কর্নাটকে এমন কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যেখানে গাঁজাকে পবিত্র প্রসাদ হিসাবে মানেন সেখানকার কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ।

কর্নাটকের ইয়াদগির জেলার তিনথিনিতে রয়েছে মৌনীশ্বর মন্দির। জানুয়ারিতে বাৎসরিক মেলার সময় কৃষ্ণা নদীর পারের এই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত জড়ো হন। সেই ভক্তদের প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় এক প্যাকেট করে গাঁজা। মৌনীশ্বর মন্দিরে প্রার্থনা করার পর তা সেবন করেন ভক্তরা। মন্দির কমিটির সদস্য গঙ্গাধর নায়ক গঞ্জিকাসেবনের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।

গঙ্গাধর জানিয়েছেন, গাঁজা প্রসাদ মৌনীশ্বরের ঐতিহ্য। তিনি বলেন, ‘ভক্ত ও সাধুরা বিশ্বাস করেন গাঁজা ধ্যান করার ক্ষমতা ও জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করে।’ মেলার সময় যে কেউ এসে এখানে গাঁজা খেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে নেশা করার জন্য বাইরের কাউকে গাঁজা বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

ইয়াদগির ও রাইচুরের বেশ কয়েকটি আশ্রমেও এই রীতি প্রচলিত আছে। রাইচুর জেলার সিন্ধানুর তালুকে রয়েছে অম্বা মঠ। সেখানকার সদস্য মহন্তেশের মতেও ধ্যানশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে গাঁজা। তিনি বলেছেন, ‘এটা নেশার দ্রব্য নয়। অনন্ত আনন্দে পৌঁছানোর রাস্তা। অনেকে সপ্তাহে একদিন গাঁজা সেবন করেন ও ধ্যান করেন।’

একই মত ইয়াদগিরি জেলার শোরাপুর তালুকের সিদ্ধাবতা দামা শিবাযোগী আশ্রমের সদস্যদেরও। সেখানকার সিদ্ধারামেশ্বরা শিবাযোগী বলেন, ‘ধ্যানে মনোবনিবেশ করার জন্য গাঁজা খাই আমরা।’

সম্প্রদায়ের লোকেদের ভাবাবেগকে আঘাত করা থেকে বিরত থাকতে সব কিছু জেনে শুনেও ‘চোখ বন্ধ’ রাখে পুলিশ। এ বিষয়ে রাইচুরের পুলিশ সুপার প্রকাশ নিত্যম বলেন, ‘গাঁজা যেখানেই পাওয়া যাচ্ছে, আমরা তা বাজেয়াপ্ত করছি। কিন্তু মন্দির বা মঠের ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা নেই।’