বাবার হাতে রাজকন্যা লতিফার বন্দির ঘটনায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ

বাবার হাতে রাজকন্যা লতিফার বন্দির ঘটনায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ

দুবাইয়ের রাজকন্যা লতিফার দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। লতিফার অভিযোগ, তারা বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুম তাকে বন্দি করে রেখেছেন।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে বরিস জনসন বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বিষয়টির দিকে নজর রাখছে। আমি মনে করি, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং কীভাবে তারা পরিস্থিতি সামাল দেন—তা দেখতে হবে।

এর আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রব রাজকন্যার বন্দির বিষয়ে বলেন, লতিফা জীবিত ও ভালো আছেন—আমি তার প্রমাণ দেখতে চাই। এরপরই এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। তবে এ বিষয়ে সরাসরি আমিরাতের কাছে জানতে চাওয়ার পরিকল্পনা নেই ব্রিটেনের।

এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে রাজকন্যা লতিফার বন্দি থাকার বিষয়টি জানতে চাওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। লতিফার অভিযোগ, তার বাবা তাকে একটি বদ্ধ করে আটক করে রেখেছেন।

মঙ্গলবার গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও সম্প্রচার করে বিবিসি। এরপরেই এ বিষয়ে তদন্ত করতে জাতিসংঘকে আহ্বান করা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে উত্তাপন করবে। ভিডিও বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের আরবিট্রারি ডিটেনশন বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছে।

এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র এবং উন্নয়ন বিষয়ক কার্যালয়। তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনার কথা জানিয়েছে।

এ দিকে দুবাইয়ের রাজকুমারী লতিফা নিজেকে তার বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুমের ‘জিম্মি’ বলে দাবি করেছেন।

মঙ্গলবার বিবিসি এমন একটি ভিডিও প্রচার করেছে। ফুটেজটি গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছে।

এতে ৩৫ বছর বয়সী রাজকন্যাকে বলতে দেখা গেছে, আমি একজন জিম্মি, আমি মুক্ত না। এই কারাগারের মধ্যে আমি বন্দি। আমার জীবন আমার হাতে না।

তিনি একটি বদ্ধ বাথরুমের ভেতরে দেয়ালের সঙ্গে বসে কথা বলেন। বিবিসি বলছে, এই গোপন বার্তাটি রাজকুমারী তার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়েছেন।

এর আগে ২০১৮ সালেও তিনি দেশ থেকে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ভারতের মালাবর উপকূল থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন।

এরপর বাবার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব নিয়ে বছরজুড়ে পত্রিকার শিরোনাম হয়ে এসেছেন তিনি।

নতুন ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আমি বাথরুম থেকে এই ভিডিও ধারণ করেছি। কারণ একটি দরজার সঙ্গে এটিই একমাত্র কক্ষ, যা বন্ধ করে রাখতে পারি। আমার কক্ষের দরজাটি বন্ধ করে রাখতে পারি না। কারণ তার চাবি নেই।

‘আমি একটি ভিলায় আছি। আমি একজন জিম্মি। ভিলাটি কারাগারে রূপান্তরিত করে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, জানলাগুলো বন্ধ করে রাখা। আমি তা খুলতে পারি না। বাইরে পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং বাড়ির মধ্যে আরও দুই নারী পুলিশ আছে।

নির্মল বাতাসের জন্য বাইরে যাওয়ারও সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমি জানি না, কখন আমি মুক্তি পাব বা কখন আমার মুক্তি পাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। কাজেই আমার জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে রোজ আমি শঙ্কার ভেতরে থাকি।

এমজে/