তৃতীয়বারেও মমতা ‌

তৃতীয়বারেও মমতা ‌

পশ্চিমবঙ্গ আবার তৃণমূলের হাতেই। এই নিয়ে পরপর তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়তে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মোদী-শাহের যাবতীয় প্রয়াস, কৌশল ব্যর্থ। পঞ্চাশ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছে তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজ্যে যা ভোট পেয়েছিল, এ বার তা চার শতাংশ কমে হয়েছে ৩৬ শতাংশের মতো। ফলে মেরুকরণের চেষ্টা, প্রায় সব রাজ্য থেকে নেতাদের উড়িয়ে এনে ভোটের দায়িত্ব দেয়া, প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে ৩০টি জনসভা করানোর মতো বিজেপি-র কোনো কৌশলই কাজে আসেনি। বাংলার মেয়ের উপরেই ভরসা রেখেছে পশ্চিমবঙ্গ।

তবে দশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পর তৃতীয়বার তৃণমূলকে ক্ষমতায় নিয়ে এলেও মমতা এবার নিজে জিতছেন না কি হেরে গেছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা। নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথমে শুভেন্দু অধিকারী এগিয়ে ছিলেন। তারপর মমতা এগিয়ে যান। পরে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়ে দেয় মমতা এক হাজার ২০০ ভোটে জিতেছেন। কিন্তু পরে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে, মমতা এক হাজার ৬২২ ভোটে হেরে গেছেন।

মমতা জানান, ''নন্দীগ্রামে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি। কিন্তু ভোট লুট হয়েছে। আমরা আদালতে যাব।'' তারপর রাতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, ফল ঘোষণা স্থগিত রাখা হলো। পুনর্গণনা হবে কি না সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রিটার্নিং অফিসার।

এবিপি আনন্দকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, ''কীভাবে গণনা হয়েছে, তার সম্পূর্ণ তথ্য চাই। জয়ের ঘোষণা করে দেয়া হলো। তারপর বলা হলো হেরেছি। নন্দীগ্রামে আবার গণনা করতে হবে।''

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এখন ২১৫টি কেন্দ্রে এগিয়ে, বিজেপি ৭৫টি কেন্দ্রে এবং বাম জোট মাত্র একটি কেন্দ্রে এগিয়ে।

নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের কাছে বড় ধাক্কার কারণ, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে একশ আসনও ছুঁতে পারছে না। ফলে প্রশান্ত কিশোর বা পিকে যে দাবি করেছিলেন, তা মিলে যাওয়ার মুখে। দক্ষিণবঙ্গে প্রায় একচেটিয়াভাবে জিতছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গও তাদের হতাশ করেছে। যে সব আসন তারা জিতবে ভেবেছিল, তা তারা পায়নি। এরই মধ্যে পিকে ঘোষণা করেছেন, তিনি আর ভোট-পরামর্শদাতার ভূমিকায় থাকবে না। পশ্চিমবঙ্গের সাফল্যকে হাতিয়ার করে পিকে অবসর নিতে চলেছেন।

তৃণমূল প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিজেপি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ। কংগ্রেস আড়াই ও সিপিএম সাড়ে চার শতাংশ ভোট পেয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকর্মীরা এখন থেকেই জয় পালন করতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় শুরু হয়েছে সবুজ আবির খেলা। করোনার কড়াকড়ি না মেনে তারা দলের এই অসাধারণ জয় পালন করতে শুরু করেছেন।