জেরুসালেমে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ২০৫

জেরুসালেমে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ২০৫

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ঘটনায় আহতের সংখ্যা বেড়ে দুই শ' পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইলি বাহিনীর শুক্রবার রাতের হামলায় আহতের এই সংখ্যা এক বিবৃতিতে জানায় ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট। অপরদিকে জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলায় যুদ্ধাপরাধের সতর্কতা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলার ঘটনায় আহত ৮৮ জনকে তারা জেরুসালেমের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন। বাকিদের তারা ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দিয়েছেন।

ইসরাইলি পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটেই বেশিরভাগের আহত হওয়ার কারণ বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

ওই অঞ্চলে হাসপাতালে বেডের স্বল্পতায় ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট একটি ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

অপরদিকে ইসরাইলি পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের ১৭ সদস্য আহত হয়েছে।

এদিকে শুক্রবারের হামলা ও পূর্ব জেরুসালেম থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের ঘটনায় ইসরাইলি বাহিনীকে যুদ্ধাপরাধের সম্পৃক্তে সতর্ক করেছে জাতিসঙ্ঘ। জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার দফতরের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভাইল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই সতর্কতা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমরা ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি জোর করে সকল প্রকার উচ্ছেদের অবিলম্বে বিরত হওয়ার।'

তিনি বলেন, 'আমরা জোর দিয়ে প্রত্যাশা করি, পূর্ব জেরুসালেম অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত থাকবে যার ওপর আন্তর্জাতিক মানবিক আইন প্রয়োগ করা হবে।'

পূর্ব জেরুসালেমে শেখ জাররাহ মহল্লায় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের ঘটনায় ইঙ্গিত করে কোলভাইল বলেন, দখলদার শক্তি দখল ভূমির কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি জব্দ করতে পারে না। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দখল ভূমিতে বেসামরিক নাগরিক স্থানান্তর বেআইনি এবং তা যুদ্ধাপরাধ তুল্য।

জেরুসালেমে সহিংসতার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে বলন, 'এই সহিংসতার কোনো অজুহাত নেই, রমজানের শেষের দিনগুলোতে এই রক্তপাত বিশেষভাবে শান্তিভঙ্গের কারণ। এর মধ্যে শুক্রবার ইসরাইলি সৈন্যদের ওপর হামলা এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের ওপর বদলি হামলা অন্তর্ভুক্ত, যার কোনো অস্পষ্টতা ছাড়াই আমরা নিন্দা জানাচ্ছি।'

এছাড়া হামলা ঘটনায় তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর, কুয়েত ও ইরান প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রমজানের শেষ জুমায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি মসজিদুল আকসায় জড়ো হন। তারা জুমার নামাজ শেষে তারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লায় বাস করা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনে ইসরাইলি আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

মসজিদুল আকসায় বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিদের তারাবির নামাজ আদায়কালে ইসরাইলি পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই সময় ফিলিস্তিনিরা পুলিশকে পাথর ও জুতা নিক্ষেপ করতে থাকলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোঁড়ে।

গত ২৫ এপ্রিল জেরুসালেমের ইসরাইলি ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ছয় ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের বাড়ি ইসরাইলি নাগরিকদের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেয়। ওই আদেশের পর থেকেই জেরুসালেমসহ পুরো ফিলিস্তিনে অস্থিরতা বিরাজ করছে।