হামাসের নতুন অস্ত্র: আত্মঘাতী সাবমেরিন

হামাসের নতুন অস্ত্র: আত্মঘাতী সাবমেরিন

ইসরাইলের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে হামাস আত্মঘাতী সাবমেরিন ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। হামাসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কিছু না বলা হলেও ইসরাইলি বাহিনী তা প্রকাশ করেছে। তারা বিমান হামলা চালিয়ে হামাসের একটি আত্মঘাতী সাবমেরিন ধ্বংস ও সেটি রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে যে গাড়ি থেকে পরিচালনা করা হচ্ছিল, তাতেও আঘাত হেনে ক্রু অপারেটরদের হত্যা করেছে বলে দাবি করেছে।

ইসরাইলি বিমান থেকে সোমবার নেয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ড্রোন সাবমেরিনটিকে গুঁড়িয়ে দেয় এবং উত্তর গাজার টাওয়ার ব্লকের কাছের অগভীর পানিতে বিশাল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

আকাশ থেকে নেয়া আরেক ছবিতে দেখা যায়, একটি গাড়িকে শনাক্ত করে তাতে আঘাত হানা হয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, 'জঙ্গিরা' এই গাড়ি থেকেই স্বয়ংক্রিয় সাবমেরিনটি পরিচালনা করছিল।

পরে তোলা গাড়ির ছবিতে দেখা যায়, এর ছাদটি খুলে গেছে। যেভাবে তা খুলেছে, তাতে মনে হচ্ছে যে ছয়-ব্লেডের 'নিনজা' ক্ষেপণাস্ত্র তাতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব ক্ষেপণাস্ত্র আশপাশের এলাকায় ন্যূনতম ক্ষতি করে টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বিস্ফোরক-বোঝাই সাবমেরিন দিয়ে কী করতে চেয়েছিল তা জানায়নি। তবে আগে তারা এসব সাবমেরিন দিয়ে ভূমধ্যসাগরে রণতরী ও তেলকূপে আঘাত হানত।

হামাসের সাবমেরিনে ৭০ পাউন্ড পর্যন্ত বিস্ফোরকে সজ্জিত করা যায়। এটিকে টার্গেটের দিকে ধাবিত করার জন্য জিপিএস ট্র্যাংকিং ব্যবহার করা হয়েছিল।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, যে সাবমেরিনটিকে আক্রমণ করা হয়েছে, সেটি গাজা উপকূল থেকে চালু করা হয়েীছল। এটি কয়েক মিটার গভীরে ছিল, টার্গেটের দিকে পরিচালিত করা হয়েছিল। এর টার্গেট হতে পারত ইসরাইলি বিচ বা ইসরাইলি নৌবাহিনীর জাহাজ।

 


গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বোমা হামলা অব্যাহত থাকার পাশাপাশি জেরুসালেমের পবিত্র স্থানগুলোতে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরাইল ও অধিকৃত এলাকাগুলোতেও সহিংস সঙ্ঘাত চলছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যুদ্ধবিরতি আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছেন।

জেরুসালেমের ওল্ড সিটির বিভিন্ন স্থানে ফিলিস্তিনিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। জেরুসালেমে ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদের আধা মাইলের মধ্যেও এই বিক্ষোভ হয়।

এদিকে পশ্চিম তীরের বেইত আল বসতিতে ইসরালি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুই সৈন্য গুলিতে আহত হয়েছে। এক সৈন্যের আঘাতা খুবই সামান্য হলেও অপরজন বেশ আঘাত পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। উভয়ের পায়ে গুলি লাগে।

পশ্চিম তীরের হেবরন নগরীতেও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় রাস্তায় জ্বলন্ত ব্যারিকেড স্থাপন করে, অফিসারদের লক্ষ্য করে প্রজেক্টাইল নিক্ষেপের জন্য স্লিঙশট ব্যবহার করে।

মঙ্গলবার ইসরাইলি অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা ও ইসরাইলের ২১ ভাগ আরব সংখ্যালঘু গাজার প্রতি সংহতি প্রকাশের জন্য সাধারণ ধর্মঘট পালন করার প্রেক্ষাপটে এসব সংঘর্ষ হয়।

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ২১৮ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১০০ জনই নারী ও শিশু।

হামাসও ইসরালি হামলার জবাব দিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার হামাস ৭০টি রকেট নিক্ষেপ করে। এগুলোর বেশির ভাগই আয়রন ডোমে ভূপাতিত হয়। গাজার রকেটে মঙ্গলবার দক্ষিণ ইসরাইলে একটি কারখানায় আঘাত হানলে অন্তত দুজন নিহত হয়। এছাড়া আহত হয় আরো কয়েকজন। সূত্র : ডেইলি মেইল ও আল জাজিরা

এমজে/