দলের কাছে খাবার চাইলেন সু চি

দলের কাছে খাবার চাইলেন সু চি

গোঁ ধরেছেন তিনি। সেনাদের দেওয়া খাবার খাবেন না। নিজের টাকাতেই চলছিল তার খাওয়া ও চিকিৎসা খরচ।

এখন হাতে টাকা নেই। খাদ্য সংকটে ভুগছেন তিনি। ওষুধও যা ছিল শেষ। তাই অনন্যোপায় হয়ে জান্তার হাতে বন্দি গণতন্ত্রপন্থি নেতা অং সান সু চি নিজ দলের কাছে খাবার চাইলেন সহবন্দি অন্য আট নেতা ও প্রিয় কুকুর তাইচিদোর জন্য। সোমবার আদালত থেকে ফিরে তার আইনজীবীরা এমন তথ্যই জানালেন। খবর ইরাবতীর।

সু চির প্রতিনিধি ড. মিন মিন সোয়ে বলেন, ‘মা (সু চি) জানিয়েছেন, প্রতি দুসপ্তাহ পর পর তাদের খাবারের জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখন তার হাতে নগদ টাকার অভাব দেখা দিয়েছে।’

বন্দি হওয়ার পর থেকে নিজের টাকাতেই চলছিল তার খাবার-দাবার, ওষুধসহ অন্যান্য খরচ। এই প্রতিনিধির কাছে তিনি বলেছেন, ‘যারা আমাকে বন্দি করেছেন, তাদের কাছ থেকে কোনো সাহায্য চাই না।

সম্ভব হলে আপনারা পাঠান।’ এ খবর পেয়ে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) তার জন্য পুলিশের মাধ্যমে চাল, তেলসহ বেশ কিছু খাবারের একটি প্যাকেজ পাঠিয়েছে, যেগুলোর মূল্য স্থানীয় মুদ্রায় ৪ লাখ কিয়েট (২০ হাজার ৬০৮ টাকা)।

দলের প্রতিনিধি ইউ কি উইন জানিয়েছেন, প্যাকেজটির মধ্যে ছিল ২ বস্তা চাল, ৯ কেজি তেল এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। গ্রেফতারের পর থেকে একে একে ছয়টি মামলা করা হয়েছে সু চির বিরুদ্ধে। সোমবার আদালত সব মামলার রায় ঘোষণার জন্য গ্রেফতারের দিন থেকে হিসাব করে সর্বোচ্চ ছয় মাস (১৮০ দিন) সময় বেঁধে দিয়েছেন। সে হিসাবে মধ্য আগস্টের মধ্যে রায় ঘোষণা হতে পারে বলে সু চির আইনজীবীরা ধারণা করছেন।

৭৫ বছর বয়সি সু চির ছয়টি মামলার শুনানি চলছে নেপিদো (৫টি) এবং ইয়াঙ্গুনে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে ২৬ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তার। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি সোম ও মঙ্গলবার মামলাগুলোর শুনানি চলবে। তার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিচালনা আইন, আমদানি-রপ্তানি আইন, টেলিযোগাযোগ আইন এবং রাষ্ট্রদোহ আইনে মামলা করা হয়েছে।

মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

গ্রেফতার করা হয় স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ অন্য কর্মকর্তাদের। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে মিয়ানমারবাসী।

অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত আট শতাধিক সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে জান্তারা। তাদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বিক্ষোভকারী।

এমজে/