জাতিসংঘে ভ্যাকসিন নিয়ে ধনী দেশগুলোর স্বার্থপরতার বিরুদ্ধে সরব দরিদ্র দেশগুলো

জাতিসংঘে ভ্যাকসিন নিয়ে ধনী দেশগুলোর স্বার্থপরতার বিরুদ্ধে সরব দরিদ্র দেশগুলো

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভ্যাকসিনের মজুদ বন্ধ করতে ধনী দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছে দরিদ্র দেশগুলো। এর মধ্য দিয়ে কোভিডের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবির্ভুত হচ্ছে এবং দরিদ্র দেশগুলো কোভিড মোকাবেলায় হিমসিম খাচ্ছে বলে সাবধান বার্তা দিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। এরইমধ্যে ভ্যাকসিনের অভাবে অনেক দেশেই কোভিডের উচ্চ সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। ফিলিপাইন এমন অবস্থাকে 'ভ্যাকসিনের মানবসৃষ্ট খড়া' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

পেরু জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সংহতি ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে আফ্রিকার রাষ্ট্র ঘানা ধনী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদের অভিযোগ এনেছে। এছাড়া, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুঁতেরা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে এই বৈষম্যতাকে জঘন্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে মঙ্গলবার জাতিসংঘে বলেন, ধনী রাষ্ট্রগুলো জীবন রক্ষাকারী ভ্যাকসিন মজুদ করে রেখেছে। সেখানে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো 'এক ফোটা দুই ফোটা' করে ভ্যাকসিন পাচ্ছে। এখন তারা আবার কথা বলছে বুস্টার ডোজ নিয়ে। অথচ দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো অর্ধেক ভ্যাকসিন দেয়া নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। এই অবস্থা অবিশ্বাস্য এবং অবশ্যই এর নিন্দা হওয়া উচিৎ। যৌক্তিকভাবে কিংবা নৈতিকভাবে এই স্বার্থপর কাজের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারে না।

রয়টার্সের ভ্যাকসিন ট্রাকার বলছে, বিশ্বে যত মানুষ কোভিডের অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছেন তারমধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ ধনী রাষ্ট্রগুলোর। এরমধ্যে ২৮ শতাংশ হচ্ছে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর। অপরদিকে হাইতি ও কঙ্গোর মতো রাষ্ট্রগুলোর ভ্যাকসিন প্রদানের হার ১ শতাংশেরও কম। বুধবার ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আদো বলেন, আফ্রিকার রাষ্ট্রগুলো এই ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদের সবথেকে বড় শিকার। কলোম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আইভান ডুকে বলেন, কোভিড ভ্যাকসিনকে অবশ্যই বিশ্বজুড়ে সমানভাবে প্রদান করতে হবে। যাতে করে নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব না ঘটে। বৈশ্বিক ইমিউনিউটির জন্য বৈশ্বিক সংহতি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের প্রয়োজনের তুলনায় ৬ থেকে ৭ গুণ বেশি ভ্যাকসিন মজুদ করে রেখেছে। তারা বুস্টার ডোজ দেয়ার কথা বলছে। অথচ বিশ্বের বহু দেশ প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনটাও পাচ্ছে না।